শ্রমিকদের 'ন্যায্য পাওনা' পরিশোধে ড. ইউনূসকে বঙ্গবন্ধু পরিষদের আহ্বান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৬:৫৫ | আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ২১:১০
শ্রমিকদের 'ন্যায্য পাওনা' পরিশোধ করে দেওয়ার জন্য শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু পরিষদ।
শুক্রবার বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক এক যুক্ত বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, 'বাংলাদেশের একজন অন্যতম বিশিষ্ট ব্যক্তি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অনুযায়ী তিনি রাষ্ট্রকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেছেন এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের তাদের পরিশ্রমের ন্যায্য পাওনা শত শত কোটি টাকা পরিশোধ করেননি– এ দুটি অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টদের দায়েরকৃত মামলা চলমান রয়েছে। তাই মামলাগুলো আদালতে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় দেশ ও বিদেশ থেকে বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের কর্তৃক এর প্রতিবাদে বিবৃতি প্রদান করা অনুচিত কাজ হয়েছে। কী কী কারণে ও কারা এই মামলাগুলো দায়ের করেছেন– এই তথ্যগুলো একটু খোঁজ নিয়ে জানলে এই সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ একটি জনসংযোগ সংস্থার ব্যবস্থাপনায় এরকম সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গীর বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতেন বলে আমরা মনে করি না।'
বঙ্গবন্ধু পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, "নোবেল পুরস্কার পেয়ে যারা সম্মানিত হন তাঁদের উচিত বিখ্যাত পুরস্কারের সম্মানটুকু বজায় রাখার জন্য নিজের নৈতিকতা ও সম্মানবোধকে সবসময় সমুন্নত রেখে ব্যক্তিগত লোভের পথে পা বাড়ানো থেকে বিরত থাকা। কিন্তু তা না করে তারা যদি অন্য অপরাধীদের মতো অপকর্ম করতে শুরু করেন তখন রাষ্ট্রকে হস্তক্ষেপ ও আদালতকে বিচার করতেই হয়, কারণ এদেশে আইনের চোখে ধনী-গরিব বা বিখ্যাত-সাধারণ সবাই সমান। নোবেল পুরস্কার যারা পান তাদের মধ্যে আমরা সচরাচর যে ‘নোবিলিটি’ লক্ষ্য করি, এক্ষেত্রে সেটি দেখা যাচ্ছে না।"
বিবৃতিতে বলা হয়, 'আমরা বিশ্বাস করি যে, সকল সাক্ষ্য-প্রমাণাদি চুলচেরা বিশ্লেষণ করেই এসব মামলার চূড়ান্ত রায় দেওয়া হবে। বিচার চলাকালে এই সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ চাইলে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার প্রমাণাদি ও আইনি প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা পরীক্ষার জন্য কোনো বিশ্বখ্যাত আইন-পর্যবেক্ষকও নিয়োগ করতে পারেন কিংবা বিচার যেন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় তারও দাবি করতে পারেন। কিন্তু তাঁরা এই বিচার কাজ বন্ধ করার কোনো দাবি করতে পারেন না। পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসক-শোষক ও তাদের সহায়তাকারীদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস অবর্ণনীয় কষ্টে লড়াই করে ৩০ লাখ শহীদের মহান আত্মত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত এই স্বাধীন বাংলাদেশে ধনী-গরিব সবাই আইনের দৃষ্টিতে সমান অধিকার ভোগ করবে। দেশ-বিদেশের এই সব বুদ্ধিজীবীরা তাঁদের করা উদ্ভট দাবির মাধ্যমে প্রকারান্তরে আমাদের বিচারালয় ও বিচার ব্যবস্থাকে অসম্মান করছেন, যা কোনো বিবেচনাতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও এই মামলাগুলোর সবকিছু স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে কি-না তা দেখার জন্য তাদেরকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। কারণ এখানে বিচার-ব্যবস্থা স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়।'
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'বাংলাদেশের মানুষ শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগেই তার পাওনা পরিশোধের নীতিতে বিশ্বাস করে। আমরা বাংলাদেশের গরিব শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা, দীর্ঘদিন ধরে অপরিশোধিত বিশাল অংকের টাকা টাকা দ্রুত পরিশোধ করে দেওয়ার জন্য ড. ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ ঔদ্ধত্য দেখিয়ে কিংবা শত কোটি টাকা খরচ করে বিদেশের অতি নামী পত্রিকায় বিশাল বিজ্ঞাপন প্রকাশ করার চাইতে গরিব শ্রমিকদের পাওনা দ্রুত মিটিয়ে দেওয়া অনেক বেশি নৈতিক কাজ।' সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।
- বিষয় :
- ড. মুহাম্মদ ইউনূস
- বঙ্গবন্ধু পরিষদ