আম গাছে ছাতা ভূত

.
সমকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫ | ০০:৩৭
রায়ানের বয়স আট বছর। চুপচাপ, ভীতু আর একটু বেশি ভাবুক। বেশ কয়েকদিন ধরে রাতে তার ঘুমই আসে না! জানালার বাইরের বাগানে একটা বড় আমগাছ আছে। ওই গাছটার দিকে তাকালেই তার মনে হয়, কেউ একজন তাকিয়ে আছে!
এক রাতে হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলো। মা রান্নাঘরে। বাবা অফিসের ল্যাপটপ নিয়ে ব্যস্ত।
রায়ান ফিসফিস করে বাবাকে বলে, বাবা, ওই আমগাছটার নিচে কে দাঁড়িয়ে থাকে রোজ রাতে?
বাবা হেসে বললেন, কে আবার? হয়তো রাতজাগা কোনো পাখি।
না না; আমার মনে হয় ওটা ভূত। একদিন দেখেছি, ওর চোখ লাল হয়ে জ্বলে উঠেছিলো।
বাবা এবার গম্ভীর হলেন। ল্যাপটপ বন্ধ করে বললেন, চলো, একবার দেখে আসি।
এতো রাতে বাইরে যাবো?
আমরা দুইজন আছি। তুমি তো আমার বীর যোদ্ধা!
রায়ান কিছুক্ষণ মাথা নেড়ে বললো, ঠিক আছে, কিন্তু তুমি আগে হাঁটো।
দুজন টর্চ হাতে বাগানের দিকে গেলো। আমগাছটার নিচে গিয়ে রায়ান বাবার হাত শক্ত করে চেপে ধরলো।
হঠাৎ বাবা বললেন, ওই দেখো, ওখানে ভূত!
রায়ান ভয়ে বাবার পেছনে লুকোলো। কিন্তু একটু পরে শুনলো, বাবা হাসছেন।
এই যে ভূতটা দেখছো সেটা আসলে তোমার পুরোনো ছাতা! জানো, বাতাসে সেটি ওড়ার মতো লাগছিলো।
রায়ান কৌতূহলী হয়ে ছাতাটার দিকে তাকালো। সত্যিই তো; কালো ছাতা আর লাল রিফ্লেক্টর! দূর থেকে দেখলে একদম ভূতের মতো।
বাবা বললেন, ভয় একবার ধরে বসলে, তখন পাথরও ভূত মনে হয়। আসল ভূত হচ্ছে ভয় নিজেই!
রায়ান একটুও ভয় পাচ্ছিলো না তখন। সে বললো, তাহলে আমি ভয়কে ভয় পাই না!
বাবা বললেন, ভয়কে জিততে হলে জানতে হয় ভয়ের পোশাকের নিচে কী আছে। আমরা আজ সেটি জেনে গেছি।
সেই রাতের পর রায়ান আর ভয় পায় না। আমগাছের ছায়াকে এখন সে ডাকে ‘ভূত মামা’ নামে। আর তার বাবা? সে এখন রায়ানের ভয়বিজয়ী হিরো! n
- বিষয় :
- গল্প