ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

শিন্ডে-বিজেপি মতপার্থক্য ঘিরে জল্পনা, টালমাটাল হতে পারে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি

শিন্ডে-বিজেপি মতপার্থক্য ঘিরে জল্পনা, টালমাটাল হতে পারে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি

ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২২ | ২২:৫৯ | আপডেট: ২২ আগস্ট ২০২২ | ২৩:৩৮

দুই মাস যেতে না যেতেই ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে নানা বিষয়ে মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে শিন্ডে শিবিরের। যার ফলে মহারাষ্ট্রে আবারও রাজনৈতিক পরিস্থিতি টালমাটাল হতে পারে বলে জল্পনা উঠেছে।

‘দ্য হিন্দুস্তান টাইমস’ জানিয়েছে, পদ্ম শিবিরের অন্দরের একাংশ মনে করছেন যে, মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে একনাথ বসলেও, সামনে থেকে সরকার চালাতে অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছে বিজেপিই। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের বিজেপি সভাপতি চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে দাবি করেন, রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হবেন দেবেন্দ্র ফডণবীস। চলতি বছরের গত ৩০ জুন বিজেপির সঙ্গে সন্ধির পর একনাথকে মুখ্যমন্ত্রীর সিংহাসন ছেড়ে দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। এ জন্য ফডণবীসকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন একনাথ। দেবেন্দ্রের প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতার কথাও জানিয়েছিলেন। বর্তমানে শিন্ডের ‘ডেপুটি’ হিসাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ফডণবীস। মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে চন্দ্রশেখরের এমন মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই ২০২৪ সালের পর শিন্ডের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার ঘিরে একপ্রকার অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন একনাথ শিবিরের একাংশ।

আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, শুধু চন্দ্রশেখরের এই মন্তব্যই নয়। বুলধানা লোকসভা কেন্দ্র নিয়েও শিন্ডে শিবির বনাম বিজেপি নেতৃত্বের মধ্যে জটিলতা তৈরি হয়েছে বলে সূত্রের দাবি। বর্তমানে ওই কেন্দ্রটি শিন্ডে শিবিরের নেতা প্রতাপ যাদবের। কিন্তু ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ওই কেন্দ্রে তাঁরাই প্রার্থী দেবেন বলে ঘোষণা করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। শিগগিরই ওই কেন্দ্রে যাবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ভূপেন্দ্র যাদব। তাঁদের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা না করেই একতরফা ভাবে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করায় ‘অসন্তুষ্ট’ শিন্ডে শিবির।

শিন্ডে শিবিরের এক মন্ত্রী বলেছেন, ‘আগামী লোকসভা নির্বাচনে নিজেদের আসন ধরে রাখতে নিজেদের মতাদর্শ বদলেছেন ১২ জন সাংসদ। অথচ কয়েক মাসের মধ্যেই তাঁদের সঙ্গে কোনও কথা না বলে একতরফা ভাবে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হচ্ছে। আরও কয়েকটি লোকসভা কেন্দ্র রয়েছে, যেগুলি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মতপার্থক্য তৈরি হতে পারে।’

শিন্ডে শিবিরের একাংশের ধারণা, আগামী দিনে নির্বাচনে আসন বণ্টন নিয়েও বিজেপির সঙ্গে তাঁদের মতানৈক্য হতে পারে। একনাথরা চান সমান ভাবে আসন বণ্টন করা হোক। কিন্তু মুম্বইয়ের বিজেপি সভাপতি আশিস শেলার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, তাঁরাই বেশি সংখ্যক আসনে লড়বেন। এমনকি, মুম্বইয়ের আগামী মেয়রও বিজেপির কেউ হবেন বলে জানানো হয়েছে। শিন্ডে শিবিরের এক বিধায়কের কথায়, ‘বৃহন্মুম্বই পুরসভায় ২২৭টি আসনে জয়ের লক্ষ্যে এগোচ্ছে বিজেপি। তার মানে আমাদের জন্য গুটিকয়েক আসন পড়ে থাকবে।’ পদ্ম শিবিরের সিদ্ধান্ত ঘিরে ‘ক্ষুব্ধ’ হয়েছেন শিন্ডে শিবিরের নেতারা। সূত্রের খবর, বিজেপি নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভপ্রকাশ করছেন শিন্ডে শিবিরের একাধিক নেতা।

প্রসঙ্গত, শিবসেনায় বিদ্রোহ ঘোষণা করে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়েছেন শিন্ডেরা। একনাথ-বিজেপি জোট সরকার বেশি দিন টিকবে না বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার। তিনি দাবি করেছিলেন, ছয় মাসের মধ্যেই পতন হবে এই সরকারের। এই প্রেক্ষাপটে মহারাষ্ট্রে সম্প্রতি শিন্ডে শিবির ও বিজেপির মধ্যে একাধিক বিষয়ে যেভাবে মতপার্থক্যের খবর প্রকাশ্যে আসছে, তা সে রাজ্যের রাজনীতিতে নয়া মাত্রা যোগ করেছে।

আরও পড়ুন

×