বিশ্বভারতীর জমির মামলায় অমর্ত্য সেনের জয়

নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। ছবি-সংগৃহীত
কলকাতা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ | ১৮:৫৯ | আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ | ১৯:০৮
দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর বিশ্বভারতীর বিতর্কিত জমি মামলায় জয় পেয়েছেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। বুধবার জমি বিবাদ মামলায় অমর্ত্য সেনের পক্ষে রায় দেন সিউড়ি জেলা আদালত।
একই সঙ্গে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নোটিশ খারিজ করে আদালত জানান, গোটা বিষয়টি পরিকল্পনা মাফিক। এটি অমর্ত্য সেনকে হেনস্তার চেষ্টায় করা হয়েছে।
বিশ্বভারতীর ১৩ ডেসিমেল জায়গা অর্মত্য সেন দখল করে আছেন, এমন অভিযোগ তুলে ‘এভিকশন অর্ডার’ বা উচ্ছেদের নির্দেশ সম্বলিত নোটিশ জারি করেছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি তপ্ত হয়ে ওঠে। মামলা গড়ায় আদালত পর্যন্ত। বুধবার সেই নোটিশ খারিজ করার আবেদন জানিয়ে সিউড়ি জেলা জজের এজলাসে যান অমর্ত্যের আইনজীবী। সেই মামলায় বিশ্বভারতীর ‘এভিকশন অর্ডার’কে বাতিল করে দিয়েছেন আদালত। এর ফলে কার্যত জমি মামলায় অমর্ত্য সেনের জয় হয়েছে বলে জানান, তার আইনজীবীরা।
অমর্ত্য সেনের আইনজীবী বিমান চৌধুরী বলেন, আদালত বিশ্বভারতীর দাবি খারিজ করেছেন। গোটা ঘটনাটি পরিকল্পনা মাফিক, এ ঘটনাটি পক্ষপাতমূলক বলেও জানিয়েছেন আদালত।
আরেক আইনজীবী সৌমেন্দ্র রায় চৌধুরী বলেন, আদালত আপাতত বিশ্বভারতীর দাবি খারিজ করে দিয়েছেন। বিশ্বভারতীর দাবি আর থাকল না। বিচারক রায়ে বলেছেন, বিশ্বভারতীর ‘এভিকশন অর্ডার’ সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিহিংসাপরায়ণ।
তবে এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, অমর্ত্য সেনের বোলপুরের বাড়ি প্রতীচীর সীমানা লাগোয়া জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। বিশ্বভারতীয় তরফে দাবি করা হয়েছে, সেখানে মোট ১.২৫ একর জমি লিজে দেওয়া হয় অমর্ত্যের প্রয়াত বাবা আশুতোষ সেনকে। ১৩ ডেসিমেল জমি অমর্ত্য সেন ‘জবরদখল’ করে রেখেছেন বলে অভিযোগ করা হয়। এই বিষয়টির জল গড়িয়েছিল আদালতে। তবে রাজ্য সরকার জানিয়েছিলেন ১.৩৮ একর জমির ক্ষেত্রেই মিউটেশন রয়েছে অমর্ত্য সেনের নামে। এই নিয়ে তাঁকে সমস্ত রকমের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ওরা যদি অমর্ত্য সেনের বাড়ি ভাঙার চেষ্টাও করে আমি সেখানে গিয়ে বসে পড়ব। শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বোলপুরের বাড়িতেও গিয়েছিলেন এবং পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন।
এই মামলাটি আদালতে গড়ানোর পর নানা মহল থেকে একাধিক বক্তব্য উঠে আসছিল। কলকাতা হাইকোর্ট বিশ্বভারতীর উচ্ছেদের নোটিশে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল ও মামলাটি নিম্ন আদালতকে শোনার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই মতে সিউড়ি জেলা আদালতে মামলাটি চলছিল৷ আজ সিউড়ি জেলা আদালতের বিচারক বিশ্বভারতীর উচ্ছেদের নোটিশে স্থগিতাদেশ দেন। অর্থাৎ, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জমি খালি করতে পারবেন না। ১৬ সেপ্টেম্বর ফের মামলাটি আদালতে উঠবে। ততদিন এই স্থগিতাদেশ বলবৎ থাকবে।
তবে মামলাটি উচ্চ আদালতে গড়াবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।
- বিষয় :
- অমর্ত্য সেন
- মামলা