স্বাধীনতা ঘোষণা নিয়ে মেজর হাফিজের বক্তব্য মিথ্যা
আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু পরিষদ নেতারা

‘আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের মুক্তির সোপান’ শীর্ষক আলোচনা সভা
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৪ | ২১:৫১
সম্প্রতি বিএনপির সমাবেশে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা বিষয়ে দলটির নেতা মেজর হাফিজের দেওয়া বক্তব্যকে ‘মিথ্যাচার’ আখ্যায়িত করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতারা। তারা বলেন, ইতিহাসের সত্যকে বিকৃত করা বা মিথ্যা দিয়ে ঢেকে দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণাকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চক্র বারবার এই কুতর্ক সামনে আনে। কারণ তাদের পায়ের তলায় মাটি নেই।
স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ‘আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের মুক্তির সোপান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তারা এসব কথা বলেন। ‘বঙ্গবন্ধু পরিষদ’ এর আয়োজন করে। সংগঠনের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাবেক শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান, ঢাবি অধ্যাপক নুরুর রহমান খান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ সিকদার, বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম প্রমুখ।
গত ১৪ মার্চ এক অনুষ্ঠানে মেজর হাফিজ বলেন, ২৫ মার্চে ভয়াবহ ক্র্যাকডাউনের পর দেশবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে চট্টগ্রাম থেকে অষ্টম ইস্ট বেঙ্গলের উপ-অধিনায়ক মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তাঁর এই ঘোষণা দেশবাসীকে উজ্জীবিত করেছে, অনুপ্রাণিত করেছে, বিশ্ববাসী এ সম্পর্কে জেনেছে। আওয়ামী লীগ এই ইতিহাস বিকৃত করছে। তারা মুক্তিযুদ্ধকে হাইজ্যাক করেছে।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতারা মেজর হাফিজের বক্তব্যকে ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ, মিথ্যাচার এবং দেশের প্রচলিত আইনে ফৌজধারি অপরাধ’ বলে মন্তব্য করেন। তারা বলেন, ইয়াহিয়া খান তাঁর নিজের ভাষণেই বলেছেন, ‘দ্য ম্যান (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) অ্যান্ড হিস পার্টি আর দ্য এনিমি অব পাকিস্তান অ্যান্ড দে ওয়ান্ট দ্য ইস্ট পাকিস্তান কমপ্লিটলি ব্রেক ফ্রম দ্য কান্ট্রি।’ পাকিস্তান থেকে পূর্ব পাকিস্তানকে সম্পূর্ণভাবে পৃথক করার যে প্রচেষ্টা বঙ্গবন্ধু করেছিলেন, সে কারণেই বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর দল আওয়ামী লীগকে পাকিস্তানের প্রধান শত্রু বলে চিহ্নিত করেছিলেন ইয়াহিয়া।
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তখন এটি তাৎক্ষণিকভাবে সারাবিশ্বে প্রচারিত হয়েছে। এমনকি পাকিস্তানের সেনাশাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খান ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় যে ভাষণ দেন, সেই ভাষণে তিনি সরাসরি স্বীকার করে নেন, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পাকিস্তানের পূর্ব অংশকে পাকিস্তান থেকে আলাদা করে ফেলেছে। এই কথাগুলো ইতিহাসের সর্বত্র এমন সুস্পষ্টভাবে লেখা আছে যে, এগুলো নিয়ে কুতর্ক করা যায়; কিন্তু কোনো ধরনের বিতর্ক করার সুযোগ নেই। এগুলো ইতিহাসের প্রতিষ্ঠিত সত্য এবং এই সত্য নিয়েই আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব।
আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক জিয়া রহমানের মৃত্যুতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
- বিষয় :
- স্বাধীনতা
- মেজর হাফিজ
- বঙ্গবন্ধু পরিষদ