গ্যাস সংকট

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে তীব্র গ্যাস সংকটে পড়েছে দেড় শতাধিক শিল্প কারখানাগুলো। এতে ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন। বন্ধ হয়ে গেছে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

এমনিতেই দেশে গ্যাসের তীব্র সংকট চলছে। এর মধ্যে সরবরাহ আরও কমে যায়। বৈরী আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজারের মহেশখালীর গভীর সাগরে অবস্থিত টার্মিনাল থেকে এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়। গত মঙ্গলবার থেকে এ সমস্যা শুরু হয়। এতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দেয়। বিশেষ করে আজ দিনভর বাসাবাড়ি ও শিল্পে ভোগান্তি চরম আকার নেয়। তবে এদিন সন্ধ্যা থেকে এলএনজি সরবরাহ বাড়তে থাকায় পরিস্থিতির উন্নতি হতে থাকে। গতকাল

বৃহস্পতিবার সকাল সাতটা। পরিবারের সদস্যদের জন্য রান্না করতে যান নগরীর বহদ্দারহাট এলাকার গৃহিণী সানজিদা আক্তার। দেখেন, চুলায় আগুন জ্বলছে না। পরে হোটেল থেকে সকালের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। দুপুরেও খেতে হয় হোটেল থেকে।

চাহিদার তুলনায় গ্যাস মিলছে ৪০ শতাংশ কম। কলকারখানার চাকা ঘুরছে ধুঁকে ধুঁকে। ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, আশুলিয়া, ভালুকাসহ দেশের সব শিল্পাঞ্চলেই অভিন্ন পরিস্থিতি। সবচেয়ে বিপদে

বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় ঢাকা ইপিজেডে অবস্থিত ইউনাইটেড গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এতে বিদ্যুতের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে কোম্পানির ৯০টি কারখানা। এসব কারখানায় অন্তত ৯০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। এ ঘটনায় শ্রমিক অসন্তোষের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গ্যাস সংকটে দুর্ভোগের কথা জানিয়ে রাজধানীর পল্লবীর বাসিন্দা রেজিনা খাতুন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ৭টায় গ্যাস নাই হয়ে যায়। সন্ধ্যায় ছিল দেড় ঘণ্টা। শুক্রবার সকাল ৭টায় উঠে আধা ঘণ্টায় কোনো রকমে তিন কাপ চা করা গেছে। তার পর থেকে গ্যাস হাওয়া! গত কয়েক দিন ধরে গ্যাসের এমনই অবস্থা, রান্না করাই মুশকিল হয়ে গেছে।’

ডলার সংকটে গত জুন থেকে অন্তত তিন মাস সার আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খোলা স্থগিত ছিল। এর ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত গড়ে তুলতে না পারায় সারাদেশে সার সরবরাহে সংকট দেখা দিয়েছে।

দেশে বর্তমানে গ্যাস সংকট রয়েছে। গ্যাস সংকট কেটে গেলে সারের ঘাটতি থাকবে না। শনিবার দুপুরে নরসিংদীর ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া ফাটিলাইজার প্রকল্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। 

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ. কে. আজাদ বলেছেন, জ্বালানি সংকটে অনেক কারখানা রুগ্ণ হয়ে যাচ্ছে। আমরা ব্যবসা টিকাতে পারছি না। আমাদের গ্যাস দেন, আমরা বৈদেশিক মুদ্রা দেব।

প্রায় ৯ মাস পর উৎপাদন বিভাগে গ্যাস সংযোগ পেয়েছে আশুগঞ্জ সার কারখানা।