জান্তা সরকার

মিয়ানমারে সামরিক জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় একটি স্কুলে ২২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২০ জনই শিশু। বাকি দুজন শিক্ষক। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে দেশটিতে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর ঘোষিত মানবিক যুদ্ধবিরতির মধ্যেই। সোমবার রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি গ্লোবাল।

গত মাসে মিয়ানমারে হয়ে যাওয়া ৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প দেশটির জন্য ছিল এক বড় ধাক্কা। প্রাকৃতিক এ বিপর্যয়ে মারা গেছেন কয়েক হাজার মানুষ। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।

মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়াদের উদ্ধারে যখন হিমশিম খাচ্ছে জান্তা সরকার তখনও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির কিছু অংশে বিমান থেকে বোমা হামলা চলছে। এই হামলাকে ‌‘আপত্তিকর ও অগ্রহণযোগ্য’ হিসেবে বর্ণনা করেছে জাতিসংঘ।

মিয়ানমারের জান্তা সরকার তাদের বৈধতা ও আসন্ন নির্বাচন নিয়ে সমর্থনের জন্য অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে। তারই অংশ হিসেবে আগামী সপ্তাহে বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দিতে থাইল্যান্ড যাচ্ছেন মিয়ানমার জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং।

মিয়ানমারজুড়ে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে জান্তা বাহিনী। স্কুল, বাস্তুচ্যুত মানুষের শিবির, হাসপাতাল, ধর্মীয় স্থানসহ বিভিন্ন স্থানে চালানো নির্বিচার এ হামলায় গত ১০ দিনে অর্ধশতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন।

সর্বত্রই গণতন্ত্র আক্রমণের মুখে। এতে সামনের সারিতে রয়েছে মিয়ানমার। একটি সামরিক একনায়কতন্ত্র নির্বাচিত নেতাদের কারারুদ্ধ করেছে, জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছে এবং দেশকে সন্ত্রাসের যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করেছে।

আদমশুমারি করতে গিয়ে হামলার শিকার- ২০২৪ সালে এমন পরিস্থিতিই দেখা গেছে মিয়ানমারে। গত বছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে বারংবার বিদ্রোহীদের কবলে পড়েন আদমশুমারি কর্মী এবং তাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সেনা কর্মীরা।

মিয়ানমারের হাসপাতাল ও একটি জনবহুল গ্রামে ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তার বিমান হামলায় দুই শিশুসহ কমপক্ষে ২০ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন।

মিয়ানমারের কাচিন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ১৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও ১০ জন। শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকালে রাজ্যটির তানাইং শহরের একটি মার্কেটে এ হামলার ঘটনা ঘটে। 

মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলীয় চিন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে দেশটির সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধরত বিদ্রোহীরা। ওই অঞ্চলের বিদ্রোহী গোষ্ঠী চিন ব্রাদারহুড সোমবার দাবি করে, সপ্তাহান্তে মিনদাত ও কানপেটলেট শহর দুটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ায় চিন রাজ্যের ৮০ শতাংশই জান্তার হাতছাড়া হয়ে গেছে।