নিভে গেছে কবি সুনীলের বাড়ির আলো

মাদারীপুর সংবাদদাতা
প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২২ | ১০:২৩ | আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২২ | ১০:২৩
নিভে গেছে বাংলা সাহিত্যের আধুনিক কবি ও সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মাদারীপুরের কালকিনির পৈতৃক বাড়ির আলো। বিল বকেয়া থাকায় সম্প্রতি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নামে থাকা বিদ্যুৎ সংযোগটির দুই বছরের বিল বকেয়া পড়েছে। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করে কবির বাড়িতে ফের বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও সাহিত্যপ্রেমীরা। এদিকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ১৯৩৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর মাদারীপুরের কালকিনির পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে পাঠশালায় পড়া অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে সপরিবারে পাড়ি জমান পশ্চিম বাংলায়। তখন দেশান্তরি হওয়ার অনেক বছর পর ২০০৩ সালে প্রথম মাদারীপুরে এসেছিলেন কবি।
তার আগমনের পর থেকে সেই বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণসহ সার্বিক দিক নজরে আসে স্থানীয় সাহিত্যপ্রেমী ও এলাকাবাসীর। কালকিনির সেই সময়ের ইউএনও শেখ হাফিজুর রহমানের সহযোগিতায় সুনীলের ৭ একর ১৫ শতাংশ জমি দখলমুক্ত করা হয়। পরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কালকিনির ইউএনওর নামে মিটার এনে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ সংযোগ।
দুই বছরের বেশি সময় বিদ্যুৎ বিল না দেওয়ায় বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে কবির বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ। কবির বাড়ির আলোহীন দেখে ক্ষুব্ধ সাহিত্যপ্রেমী ও এলাকাবাসী। দ্রুত কবির বাড়িতে আগের মতো আলো জ্বলবে- এমনটাই দাবি তাদের। এদিকে দায় এড়াতে ইউএনও দোষ চাপাতে চাইছেন সুনীল সাহিত্য ট্রাস্ট নামে সংগঠনের ওপর। তবে জেলা প্রশাসন বলছে, সমস্যা চিহ্নিত করে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা হবে।
সুনীল সাহিত্য ট্রাস্টের সদস্য বিপ্লব হাওলাদার জানান, কবির বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ ইউএনওর নামে ছিল। বিদ্যুৎ বিল না দেওয়ার কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
কালকিনি উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম আব্দুল মাজেদ বলেন, ‘আমরা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার আগে ইউএনওকে জানিয়েছিলাম। তিনি বকেয়া বিল পরিশোধ করেননি। পরে বকেয়া বিল পরিশোধ করলে আমরা ফের বিদ্যুৎ সংযোগ দেব।’
কালকিনির ইউএনও দিপংকর তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের স্মৃতিবিজড়িত পৈতৃক ভিটা সংরক্ষণ করার জন্য বেসরকারিভাবে একটি কমিটি আছে। এর সঙ্গে উপজেলা প্রশাসনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে এই কমিটি কতটা সক্রিয় আছে, তা জানা নেই। যখন মেলা হয়েছিল তখন উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। এখন কী অবস্থায় আছে তা জানি না। তবে কমিটি চাইলে আমাদের পক্ষ থেকে সব রকম সহায়তা দেওয়া হবে।’
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। সময় করে কবির বাড়ি ঘুরে দেখে তার স্মৃতি রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
- বিষয় :
- সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
- ঢাকা
- মাদারিপুর
- কালকিনি