ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক
প্রাণী থাকবে উন্মুক্ত দর্শনার্থী খাঁচায়

ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে উন্মুক্ত থাকবে বন্যপ্রাণী। নির্দিষ্ট গণ্ডিতে বন্যপ্রাণী দেখবেন পর্যটকরা-সমকাল
মাহমুদুর রহমান মাহমুদ, চকরিয়া (কক্সবাজার)
প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ১৭ জুন ২০২২ | ১৫:৩২
চারদিকে হিংস্র প্রাণীর বিচরণ; খাঁচার ভেতর থেকে এদের বন্য আচরণ দেখছেন দর্শনার্থীরা। তাঁদের ভেতরে একই সঙ্গে আতঙ্ক ও রোমাঞ্চ- যদি আক্রমণ করে প্রাণীগুলো! এমন না হলে কি আর সাফারি পার্ক হয়? গাজীপুরের পর কক্সবাজারের ডুলাহাজারার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ককেও এবার সেই আদলে গড়ে তোলা হচ্ছে। পার্কের উন্নয়নে ৩১টি প্যাকেজের কাজ চলতি মাসের মধ্যে সম্পন্ন হলে সেখানে বন্যপ্রাণীদের উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। তখন দর্শনার্থীদেরই ঢুকতে হবে খাঁচায়।
মোট কথা, 'প্রকৃত' সাফারি পার্কের রূপ পেতে যাচ্ছে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্ক। সেখানে আর থাকছে না দেয়াল বা বেড়া। প্রাণীদের জন্য স্বাভাবিক পরিবেশ তৈরি করতে ঝোপঝাড়, লতাগুল্মসহ নানা প্রজাতির গাছগাছালি লাগানো হচ্ছে। এটা এমনভাবে করা হচ্ছে, যাতে দেখে সবকিছু প্রাকৃতিক মনে হবে।
সাফারি পার্কগুলোতে বন্যপ্রাণীদের মুক্ত বিচরণ করতে দেখা যায়। আর দর্শনার্থীরা থাকেন খাঁচায় বন্দি। সুরক্ষা নিশ্চিত হয়- এমনভাবে থেকেই প্রাণীদের বন্য-ক্ষিপ্রতা দেখেন তাঁরা। যেন আসল বনের ভেতরেই ঘুরে ফিরছে মুক্ত বাঘ, ভালুক, সিংহ, হরিণসহ নানা প্রাণী।
ডুলাহাজারার সাফারি পার্ক গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কেরও আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু এতদিন এটি ছিল শুধু নামমাত্র সাফারি পার্ক। প্রতিষ্ঠার ২২ বছর পর পার্কটিকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পদক্ষেপ নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এরই অংশ হিসেবে মাল্টিপ্ল্যানের আওতায় উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্পের ৩১টি প্যাকেজের কাজ চলছে। সূত্র মতে, ২৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে চলমান এসব কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৮০ শতাংশের বেশি। পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, চলতি মাসের মধ্যে কাজ শেষ হলে প্রকৃত সাফারি পার্কের অবয়ব দৃশ্যমান হবে।
প্রথম ধাপের ৩১ প্যাকেজে চলমান কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে- বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য চত্বর উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, ডরমিটরি মেরামত, কালভার্ট নির্মাণ, বন্যপ্রাণীর বেষ্টনীর আড়াই কিলোমিটার কার্পেটিং কানেক্টিং সড়ক, এইচবিবি-মেকাডম-কার্পেটিং দ্বারা তৃণভোজী বেষ্টনীর অভ্যন্তরে তিন কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ ও পুরোনো ৪ কিলোমিটার সড়ক মেরামত, ড্রেনেজ সিস্টেমের উন্নয়ন, ভূমি উন্নয়নসহ দৃষ্টিনন্দন ফটক (মূল গেট) নির্মাণ, ফুটপাত নির্মাণ, টিকিট কাউন্টার ও দর্শনার্থী অপেক্ষা কক্ষ নির্মাণ, গাড়ি পার্কিং, প্রবেশ-বের হওয়ার সড়ক নির্মাণ, বাঘ-সিংহ সাফারিতে প্রবেশ-বের হতে স্বয়ংক্রিয় ফটক নির্মাণ, চিলড্রেন এমিউজিং পার্ক নির্মাণ।
পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল উন্নয়নের পাশাপাশি সেখানে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির লতাগুল্ম-ঘাসেরও আবাদ করা হয়েছে, যাতে তৃণভোজী প্রাণীদের খাবারের ঘাটতি না হয়। পার্কের প্রকল্প পরিচালক রফিকুল ইসলাম চৌধুরী সমকালকে জানান, শতভাগ আন্তর্জাতিক মানের পার্ক হিসেবে এটিকে গড়ে তোলা হবে।
- বিষয় :
- লাহাজারা সাফারি পার্ক
- সাফারি পার্ক