ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা, স্বামীর ফাঁসির আদেশ

যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা, স্বামীর ফাঁসির আদেশ

 ফরিদপুর অফিস

প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ০২:৩৫ | আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ০২:৩৫

ফরিদপুরে যৌতুকের দাবিতে ফরিদা বেগম নামে এক গৃহবধূকে গলাটিপে হত্যার দায়ে তার স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মামলার অপর তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

সোমবার  দুপুরে ফরিদপুরের নারী ও শিশু ট্রাইবুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ প্রদীপ কুমার রায় এ রায় ঘোষণা করেন।

রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে হাজির ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম মো. সরোয়ার শেখ (৩৫)। তিনি মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের চুন্নু শেখের একমাত্র সন্তান। তিনি পেশায় একজন ভ্যানচালক।

খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সরোয়ার শেখের মা ছাহেরা বেগম (৫৫) ও মামা ওবায়দুল শেখ (৪৫) এবং আলিয়ার শেখ (৬০)।

নিহত ফরিদা বেগম উপজেলার বাগাট গ্রামের রাশেদ শেখ ও মর্জিনা বেগমের বড় মেয়ে । ২০১৭ সালের ৬ জুলাই ফরিদার লাশ উদ্ধার করা হয়। এর ১৩ দিন পরে ফরিদার মা মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে মধুখালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ঘটনার দিন সকালে ফরিদা বেগম তার মাকে ফোন করে জানান , ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য তার স্বামী তাকে মারপিট করছে। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফরিদার মা লোক মারফত খবর পান যে, তার মেয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে মারা গেছে। তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মেয়েকে জামাইয়ের বাড়ির বারান্দায় শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পান। এসময় তিনি মেয়ের গলায় ফোলা ও কাপড় পেঁচানো দাগ দেখতে পান।

এ ঘটনার পর পুলিশ আলামত জব্দ করে লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় এবং মধুখালী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করে।

এদিকে, লাশের ময়নাতদন্তে গৃহবধু ফরিদাকে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যার রিপোর্ট পাওয়া যায়। এ অবস্থায় আদালতে একটি নিয়মিত মামলা রুজু হওয়ায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মনিরুজ্জামান ইতোপূর্বে দায়েরকৃত অপমৃত্যু মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন আদালতে।

মামলার পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ময়নাতদন্ত রিপোর্টে নিহতের গলায় চারটি আঘাতের চিহ্ন ছিলো। তাকে গলাটিপে হত্যার কথা উল্লেখ করা হয় এতে। আসামি সরোয়ার শেখের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো। এছাড়া আসমিকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হলো।

মামলায় আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট নারায়ণ চন্দ্র দাস এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট স্বপন পাল।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট স্বপন পাল বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আদালত ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করেছেন।

তিনি বলেন, এই রায়ের মধ্যে দিয়ে সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমে যাবে।

আরও পড়ুন

×