ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

গবেষণার ফলাফল প্রকাশ

কর্ণফুলীর পাড়ে ৫২৮ প্রজাতির উদ্ভিদ শনাক্ত

কর্ণফুলীর পাড়ে ৫২৮ প্রজাতির উদ্ভিদ শনাক্ত

প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২২ | ০৮:৫৮ | আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২২ | ০৮:৫৮

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর মোহনা থেকে কাপ্তাই বাঁধ পর্যন্ত দুই পাড়ে মোট ৫২৮ প্রজাতির উদ্ভিদের দেখা পেয়েছেন একদল গবেষক। বিপন্ন প্রজাতির ৮১টি উদ্ভিদও এ সময় শনাক্ত করা হয়েছে। নদীর উজানের দিকে পাহাড়ি অঞ্চলে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদের দেখা মিললেও ভাটি অঞ্চলে বন উজাড় হয়ে গেছে।

শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়। গবেষণায় নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ইকোর সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক রাসেল। সংবাদ সম্মেলনে ইকোর সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শাহেদ মুরাদ সাকু ও এসএম আবু ইউসুফ উপস্থিত ছিলেন।

বেসরকারি মানবিক, সামাজিক উন্নয়ন ও গবেষণা সংস্থা ইফেক্টিভ ক্রিয়েশন অন হিউম্যান ওপেনিয়নের (ইকো) উদ্যোগে পরিচালিত কর্ণফুলী নদীর প্রাণপ্রকৃতি, উদ্ভিদবৈচিত্র্য ও দূষণের কারণ নির্ণয়ে পরিচালিত এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে আসে। জরিপ গবেষণাটি এ বছরের জানুয়ারি থেকে শুরু করে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত চালানো হয়।

সভায় ওমর ফারুক রাসেল বলেন, গবেষণায় ৫২৮ প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্যে ১১৩টি একই পরিবারভুক্ত। এর মধ্যে বড় বৃক্ষ ১৪৪ প্রজাতির, গুল্ম ৬৯ প্রজাতির, লতা ৫৮ প্রজাতির, বীরুৎ ২৪৪ প্রজাতির ও পরজীবী ১৩ প্রজাতির। নদীর মাঝখানে অবস্থিত বাকলিয়া চরে ১৫৫ প্রজাতির উদ্ভিদ শনাক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে নদীর সবচেয়ে দূষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত বঙ্গোপসাগর মোহনা থেকে কালুরঘাটের পর পর্যন্ত পাওয়া গেছে মোট ১২০ প্রজাতির উদ্ভিদ। শনাক্ত করা গাছের মধ্যে ৩৫৫টি ঔষধি উদ্ভিদ রয়েছে। এর মধ্যে কালমেঘ, হিজল, বেগুনি হুরহুরিয়া, হাড়গোজা, ছাতিম, আকন্দ, তুফানিলতা, হাতিশুঁড়, সোনালু, স্বর্ণলতা পাওয়া গেছে। ভবিষ্যতে বিপন্ন হতে পারে কুরুজ, শ্যামলতা, চীনালতা এমন প্রজাতির সংখ্যা ৬৩। নদী দখল ও দূষণ বন্ধ না হলে ভবিষ্যতে ৮১টি প্রজাতির বিপন্ন উদ্ভিদ হারিয়ে যেতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কর্ণফুলী নদীতে মার্চেন্ট জাহাজ ৮৫টি, কোস্টার জাহাজ ৪০৫টি, মাছ ধরার ট্রলার ২৬৪টি, টাগ নৌকাসহ ৯টি সাম্পান, ছোট ছোট নৌকা, বিদেশি জাহাজ ও ট্রলার চলাচল করে। এসব নৌযানের ময়লা, পোড়া তেল ইত্যাদি নদীতে সরাসরি ফেলা হচ্ছে। এ ছাড়া অসংখ্য নৌযান বঙ্গোপসাগর মোহনা থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত নোঙর করে রাখায় নদীর স্বাভাবিক নাব্য, ডলফিনসহ জলজ প্রাণীদের স্বাভাবিক বিচরণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শিকলবাহা এলাকাকে ডলফিনের আবাস হিসেবে চিহ্নিত করেছে গবেষকদের দল। নদীর দুই পাশে প্রায় ৫০ হাজার খোলা শৌচাগার রয়েছে। এ ছাড়া নগরের বর্জ্য, কারখানার তরল ও সলিড বর্জ্য, শুঁটকিপল্লির বিষ ও বর্জ্য, কীটনাশক, ৫৩টি শিল্পকারখানার বর্জ্য, ১৪টি নৌযান মেরামতের জায়গা, বাজার, নালা, খামার ইত্যাদি দূষণের প্রধান কারণ। এ ছাড়া প্লাস্টিক ও পলিথিন দূষণে বড় ভূমিকা রাখছে।

আরও পড়ুন

×