করোনা থেকে বাঁচতে আহমদ শফীর ৫ পরামর্শ

ফাইল ছবি
হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২০ | ০৮:৪৫
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে পাঁচটি বিশেষ পরামর্শ দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর ও দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি জনগণের প্রতি এসব পরামর্শ দেন। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রচার সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ আনাস মাদানী সমকালকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আহমদ শফী বিবৃতিতে বলেন, ‘করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে কিছু পরামর্শ দিতে চাই!
১. রোগ-মহামারি কিংবা আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হতে আসে। বান্দাদের পরীক্ষা করতে বিভিন্ন সময় আল্লাহ তায়ালা এমন করে থাকনে। যেমন পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, "অবশ্যই আমি তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি এবং ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে ধৈর্যধারণকারীদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ।' (সূরা বাকারা: ১৫৫)। তাই বর্তমান সময়ে আমাদের উচিত হবে ধৈর্যধারণ করা, আল্লাহ তায়ালার ওপর বিশ্বাস আরো সুদৃঢ় করা এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।’
২. মহামারি কিংবা ভাইরাস নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন শতাব্দিতে বিশ্বব্যাপী এমন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল। রাসূল (সা.) এর সময়েও এমন মহামারি রোগ ছড়িয়েছিল।মানবতার মুক্তির দূত রাসূল (সা.) এর সমাধানও দিয়ে গেছেন। রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন, যদি তোমরা মহামারীর কোনো সংবাদ শোন, তো সেখানে তোমরা প্রবেশ হতে বিরত থাক। আর যদি কোনো শহরে বা নগরে কেউ সে মহামারীতে আক্রান্ত হয়, তো সেখান থেকে তোমরা বের হয়ো না।' (বুখারী শরীফ : হাদীস নং ৫৩৯৬)। তাই কোথাও মহামারি কিংবা সংক্রমণব্যাধি দেখা দিলে ওই জায়গা থেকে প্রস্থান করা অনুচিত। তাই আমাদের হাদিসটির ওপর আমল করে গমন ও প্রস্থান বিষয়ে সতর্কতা; প্রয়োজনে কড়াকড়ি আরোপ করা উচিত।
৩. পৃথিবীতে যা কিছু ঘটে সবকিছু আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছাতেই ঘটে। তবে সবকিছুর কারণ ও প্রতিকার বুঝতে আমরা সামর্থ রাখি না। কারণ আল্লাহ তায়ালা সবচেয়ে কৌশলী ও প্রজ্ঞাবান। তাই এমন মুহূর্তে আমাদের উচিত হবে মসজিদে ও ঘরে সম্মিলিত কিংবা একাকীভাবে দোয়ার আমল করা। আল্লাহ তায়ালার কাছে সমস্ত অপরাধ ও পাপ থেকে ক্ষমা চাওয়া এবং করোনাভাইরাসসহ সকল প্রকার রোগ থেকে পরিত্রাণ চাওয়া। কারণ কান্না বিজড়িত দোয়া আল্লাহ তায়ালার আজাব কমাতে পারে।
৪. প্রত্যেক মসজিদে কাল (বুধবার) ফজর থেকে কুনুতে নাজেলা পড়া হোক। কারণ কুনুতে নাজেলার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কাছে বিশেষ আর্জি করা হয়। যেমন হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, "রাসূল (সা.) ফজরের নামাযের সময় সর্বদা কুনুত নাজেলা পড়তেন না। শুধু পড়তেন কোন জাতির জন্য দোয়া করতে বা বদদোয়া করার প্রয়োজন হলে। তিনি কুনুত পড়তেন যখন ফজরের নামাজের দ্বিতীয় রাকাতের রুকু থেকে মাথা উঠাতেন।’’আরবের বিভিন্ন দেশে মানুষ মসজিদে যাচ্ছে না। জুমার নামাজে অংশ নিচ্ছে না। এটা অনুচিত ও গর্হিত কাজ। যে আল্লাহ তায়ালা এই রোগ দিয়েছেন তার কাছেই মুক্তি চাওয়াই প্রকৃত মুমিনের কাজ। তাই মসজিদে মসজিদে কুনুতে নাজেলার আমল করা হোক।
৫. সর্বাবস্থায় নিজেকে পরিচ্ছন্ন রাখুন। নিজেকে জীবাণুমুক্ত রাখুন, দু'হাত ধৌত করুন। সবসময় অজু অবস্থায় থাকতে চেষ্টা করুন। ময়লা আবর্জনার মাধ্যমে কোন ব্যাধি যেন না ছড়ায় সেদিকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুন। কারণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রোগ নিরাময়ে সহযোগী এবং একটি সুন্নাহসম্মত কাজ।