ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

বাড়ির কাজ শেষে বিয়ের কথা ছিল রমজানের

বাড়ির কাজ শেষে বিয়ের কথা ছিল রমজানের

সৌদি আরবের দাম্মামে অগ্নিকাণ্ডে নিহত রমজান

রানীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০

পরিবারে সচ্ছলতা ফেরাতে ২০১৮ সালে সৌদি আরবে যান রমজান আলী (৩৩)। গত বছর পাঁচ মাসের ছুটি নিয়ে দেশে ফিরে বাড়ির কাজ শুরু করেছিলেন। ছুটি শেষে সৌদি আরব যান তিনি। বাড়ির অসমাপ্ত কাজ শেষ হলে দেশে ফিরে বিয়ে করার কথা ছিল। সৌদি আরবে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডে সে স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে।

রমজান নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ঝনঝনিয়া গ্রামের মৃত আজিজ প্রামাণিকের ছেলে। শুক্রবার সৌদি আরবের দাম্মাম শহরের হুফুপ সানাইয়ার আল মনসুরা শিল্প তালুকে একটি ফার্নিচার কারখানায় কাজে যান তিনি। সেখানে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৯ বাংলাদেশির মধ্যে তিনি একজন।

রমজানের বোন সুমি আক্তার জানান, মঙ্গলবার মায়ের সঙ্গে ইট কেনা নিয়ে শেষ কথা হয়েছিল রমজানের। শুক্রবার সকালে জানতে পারেন, ভাই মারা গেছে। তার স্বপ্ন ছিল, বাড়ির কাজ শেষ হলে দেশে ফিরে বিয়ে করবে। কিন্তু আগুনে স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দ্রুত ভাইয়ের মরদেহ দেশে আনতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

রোববার দুপুরে দেখা যায়, রমজানের বাড়িতে চলছে স্বজনের আহাজারি। শোকাহত পুরো গ্রাম। সুমি আক্তার বলেন, দু’ভাই ও দু’বোনের মধ্যে রমজান তৃতীয়। ২০১৩ সালে বাবা মারা গেলে সংসারের ভার পড়ে রমজানের ওপর। কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করে সংসার চালাত। এর পর সংসারে সচ্ছলতা আনতে ধারদেনা করে ২০১৮ সালে সৌদি আরবে যায়। গত বছর ছুটি নিয়ে দেশে ফিরে বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করলেও অর্থ সংকটে তা শেষ করতে পারেনি। পরিবার থেকে রমজানের বিয়ের কথা বলা হলেও সে বলেছিল, আগে বাড়ির কাজ শেষ হোক।

আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকতেখারুল ইসলাম বলেন, খবর পাওয়ার পর নিহত দুই পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিয়েছেন। দ্রুত মরদেহ দেশে আনার জন্য চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সৌদি আরবের দাম্মামে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৯ জন বাংলাদেশির মধ্যে আত্রাইয়ের দু’জন রয়েছেন। অপর প্রবাসী হলেন উপজেলার উদয়পুর মণ্ডলপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহমান সরদারের ছেলে বারেক সরদার।

আরও পড়ুন

×