ঢাকা মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫

স্ত্রী-সন্তান থেকেও ওমর ফারুক ‘বেওয়ারিশ’

স্ত্রী-সন্তান থেকেও ওমর ফারুক ‘বেওয়ারিশ’

বৃষ্টির মধ্যেও মরদেহ দাফন করে গাউসিয়া কমিটি কর্ণফুলী। ছবি: সমকাল

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা

প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৩ | ১৬:২৪ | আপডেট: ০৬ আগস্ট ২০২৩ | ১৬:২৪

দিনের পর দিন সংসারের ঘানি টেনেও জীবনসায়াহ্নে নিঃসঙ্গতা ছিল ওমর ফারুকের (৫০) বড় সঙ্গী। হাড় ভাঙা পরিশ্রম করে দুই ছেলে এবং এক মেয়েকে বড় করেছিলেন। ছোট একটি দোকানের আয় দিয়ে সংসারের হাল ধরে রাখার চেষ্টা করেন। খরচ মেটাতে না পেরে রাতে প্রহরীর চাকরি করতেন। কিন্তু তুচ্ছ একটি ঘটনায় স্ত্রীর সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। রেগে সন্তানদের নিয়ে স্ত্রী অন্য জায়গায় চলে যান। তার পর থেকে একা থাকা শুরু করেন তিনি। এক সময় রোগে আক্রান্ত হন ওমর ফারুক। স্থায়ী ঠিকানা চট্টগ্রামের সন্দীপ হলেও স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে থাকতেন কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামের একটি ভাড়া বাসায়। 

এভাবে কাটতে থাকে ফারুকের দিনাতিপাত। একসময় ফারুকের পাশে দাঁড়ান প্রতিবেশী কামরুন নাহার। তিনি ফারুকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু অসুস্থ ফারুককে সঙ্গে রাখতে রাজি হননি স্ত্রী বা ছেলে-মেয়েরা । 

রোগে আক্রান্ত ফারুককে ৫ দিন আগে স্থানীয় ইউপি সদস্য ভর্তি করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার রাতে মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর খবর পরিবারের সদস্যদের জানালে তারা মরদেহ গ্রহণ ও দাফনে অস্বীকৃতি জানান। তখন মরদেহের দাফনের দায়িত্ব নেন ইউপি সদস্য মাহমুদুল হক সুমন। 

সুমন বলেন, ‘ওমর ফারুককে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় দেখে আসছি। তার দুঃসময়ে পাশে থেকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তার পরিবারের কেউ পাশে আসেনি। ফারুক মারা গেলে ছেলে মেহেদীকে জানানো হয়। তিনি ব্যস্ত আছেন, বলে বাবার মরদেহ নিতে রাজি হননি।’

কর্ণফুলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দুলাল মাহমুদ বলেন, পরিবারের কেউ মরদেহ নিতে রাজি না হওয়ায় গাউসিয়া কমিটি কর্ণফুলীকে দাফনের জন্য বলা হয়। 

গাউসিয়া কমিটি কর্ণফুলী মানবিক টিমের সমন্বয়ক ইমতিয়াজ উদ্দীন বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে মরদেহ এনে দাফন করা হয়।

আরও পড়ুন

×