ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

জিপিএ ৫ পাওয়া সুমাইয়ার পড়াশোনা চলবে কীভাবে

জিপিএ ৫ পাওয়া সুমাইয়ার পড়াশোনা চলবে কীভাবে

মা-বাবার সাথে সুমাইয়া আক্তার- সমকাল

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৩ | ১৮:০০

সব বই না থাকায় সহপাঠীদের কাছ থেকে নিয়ে পড়ত মেয়েটি। বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করত হেঁটে। ভ্যানচালক বাবার আয়ে চলে পরিবারের জীবিকা। বাবার রোজগার কম হলে তিন বেলা খাবারও জুটত না। সেই মেয়েটি এবারের এসএসসি পরীক্ষায় সব বিষয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছে।

মেয়েটির নাম সুমাইয়া আক্তার। সে শিবচরের মাদবরচর ইউনিয়নের লপ্তিকান্দি গ্রামের ভ্যানচালক মো. হবি মোল্লা ও তাসলিমা বেগম দম্পতির মেয়ে। চার ভাইবোনের মধ্যে সে তৃতীয়। স্থানীয় পাঁচ্চর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নেয়। তবে এখন কলেজে ভর্তি ও পড়াশোনার খরচ নিয়ে উদ্বিগ্ন সুমাইয়া।

কয়েক বছর আগে পদ্মা নদীর ভাঙনের শিকার হয়ে চরজানাজাত থেকে এ এলাকায় আসে সুমাইয়ার পরিবার। বছরে পাঁচ হাজার টাকায় জমি ভাড়া নিয়ে দোচালা ঘর তুলে থাকছে তারা। বড় বোনের সন্তান হওয়ার পর স্বামী বের করে দেওয়ায় তিনিও আশ্রয় নিয়েছেন বাবার বাড়িতে।

জানা গেছে, অভাবের তাড়নায় নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় সুমাইয়ার বিয়ে ঠিক করেন বাবা-মা। পরে সুমাইয়া প্রধান শিক্ষকের শরণাপন্ন হয়। প্রধান শিক্ষকের সহায়তায় পড়াশোনা চালিয়ে যায়। ফরম পূরণের টাকাও দেন প্রধান শিক্ষক। এবার পরীক্ষার ফলাফলের পর বাড়িতে মিষ্টিও নিতে পারেননি বাবা। এখন কলেজে ভর্তি ও পড়াশোনার ব্যয় নিয়ে শঙ্কিত পরিবারটি।

সুমাইয়ার মা তাসলিমা বেগম বলেন, ‘আমরা কোনোদিন সুমাইয়াকে ভালো খাবার দিতে পারিনি। মেয়ের স্বপ্ন অনেক বড়। কিন্তু ওর স্বপ্ন পূরণ করার সাধ্য আমাদের নেই। এখন ওর লেখাপড়া কীভাবে চালাব, সেটাই বুঝতে পারছি না।’

বাবা হবি মোল্লা বলেন, ‘স্কুলের স্যাররা সাহায্য না করলে মেয়ের লেখাপড়াই হইত না। ওর স্বপ্ন অনেক বড় কলেজে পড়ার।’ সুমাইয়া আক্তার বলে, ‘আমার ইচ্ছা ঢাকায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া করা। মানুষের সেবা করতে বিসিএস দিয়ে প্রশাসনিক ক্যাডার হতে চাই।’

পাঁচ্চর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সামসুল হক বলেন, সুমাইয়া দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় তার লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া খুবই কষ্টকর। সমাজের বিত্তবানরা সহযোগিতা করলে তার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে।

আরও পড়ুন

×