কিশোরীকে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণের মামলা বাবার

ফাইল ছবি
বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪ | ২২:১৪
কিশোরীকে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ এনে বরগুনার আদালতে মামলা করেছেন এক বাবা। বুধবার বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ মামলাটি হয়েছে। এতে ধর্ষণের পাশাপাশি পর্নোগ্রাফি আইনেও অভিযোগ আনা হয়। মামলায় তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার, দুটি ইউপির চেয়ারম্যান ও এক ছাত্রলীগ নেতাকে আসামি করা হয়েছে।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, বিচারক মো. মশিউর রহমান খান মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পটুয়াখালী পিবিআইকে দায়িত্ব দিয়েছেন। একই সঙ্গে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন– তালতলীর নিশানবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়া, পঁচাকোড়ালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠু।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বছর দেড়েক আগে ১৭ বছর বয়সী ওই কিশোরীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন নিশানবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়া। বিয়ের আশ্বাসে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। মেয়েটি বিয়ের চাপ দিলে স্ট্যাম্পে লিখিত দিয়ে স্ত্রী পরিচয়ে তাকে নানা জায়গায় নিয়ে ধর্ষণ করেন বাচ্চু। এসব দৃশ্য মোবাইল ফোনে গোপনে ধারণও করেন। পরে তা ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে রাজ্জাক হাওলাদারের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়াতে বাধ্য করেন বাচ্চু। রাজ্জাকও এসব দৃশ্য ধারণ করে জিম্মি করেন মেয়েটিকে। তাঁর চাপে পড়ে ওই কিশোরীকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রেজবি-উল কবির জোমাদ্দারের সঙ্গে ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিনহাজুল আবেদীন মিঠুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়াতে হয়।
ভুক্তভোগীর বাবার ভাষ্য, তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে তাঁর মেয়ে ধর্ষণ মামলার হুমকি দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু ১২ এপ্রিল থানায় উল্টো পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন। এ দিনই পুলিশ ওই কিশোরীকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে মেয়েটি কারাগারে আছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রেজবি উল কবির জোমাদ্দার। তাঁর দাবি, চতুর্থ ধাপে তালতলী উপজেলা নির্বাচন হবে। ওই নির্বাচন সামনে রেখে প্রতিপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ মামলা করিয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে তিনি বা ওই দুই চেয়ারম্যানের সংশ্লিষ্টতা নেই। বিষয়টি তারা আইনগতভাবে মোকাবিলা করবেন।
যদিও এপ্রিলের মাঝামাঝি মেয়েটির সঙ্গে দুই ইউপি চেয়ারম্যান ও ছাত্রলীগ নেতার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে ওই তিনজনের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. আনিচুর রহমান মিলন বলেন, বরগুনা আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়েছেন। তিনি পটুয়াখালী পিবিআইকে তদন্ত করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেন।
- বিষয় :
- কিশোরীকে ধর্ষণ
- মামলা