ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

বরগুনায় জাল সনদে ১০ বছর ধরে চাকরি!

বরগুনায় জাল সনদে ১০ বছর ধরে চাকরি!

অভিযুক্ত শিপ্রা সরকার ও তার স্বামী তপন কুমার রায়। ছবি: সমকাল

আবু জাফর সালেহ্, বরগুনা

প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৪ | ২১:২১ | আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৪ | ২১:২৩

বরগুনার বামনা উপজেলায় জাল সনদে সরকারি চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে শিপ্রা সরকারের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন স্কুলশিক্ষিকা সমাপ্তি বিশ্বাস। সব তথ্য ঠিক রেখে তার ও বাবার নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে এসএসসি সনদ জাল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

শিপ্রা ২০১৪ সাল থেকে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের ডৌয়াতলা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা পদে কর্মরত। এ বিষয়ে জানতে শিপ্রার নম্বরে কল দিয়ে বন্ধ পাওয়া যায়। গত শনিবার বেলা ১১টার দিকে কর্মস্থলে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে গেছেন বলে সহকর্মীরা জানিয়েছেন। শিপ্রার স্বামী তপন কুমার রায় বলেছেন, অভিযোগের পর তদন্ত হয়েছে। তদন্তে প্রমাণিত হবে শিপ্রা জাল নাকি প্রকৃত সনদে চাকরি করছেন।

জানা যায়, সমাপ্তি পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার গৌরাঙ্গলাল বিশ্বাসের মেয়ে। ২০১৯ সালে এনটিআরসিএর মাধ্যমে বাশবুনিয়া রশিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত। গত বছর অক্টোবরে নাজিরপুরের ডিএসবি থেকে ফোন করে জানানো হয়– সমাপ্তির এসএসসি পরীক্ষা সনদের সব তথ্য ঠিক রেখে শুধু নাম ও বাবার নাম পরিবর্তন করে বরগুনায় শিপ্রা সরকার নামে একজন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা পদে চাকরি করছেন।

সমাপ্তি জানিয়েছেন, বরিশাল বোর্ডে তার এসএসসির সনদে রোল নম্বর ১১৩৬৭৮, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ২৪৮৯৬৩, শিক্ষাবর্ষ ১৯৯৯-২০০০ এবং পাসের সাল ২০০১।
অভিযোগের ভিত্তিতে শিপ্রার সনদ যাচাই করে দেখা যায়, সনদে সমাপ্তি বিশ্বাসের জায়গায় একইভাবে শিপ্রা সরকার এবং বাবার নাম নকুল চন্দ্র সরকার লেখা। চাকরি পাওয়ার জন্য জমা দেওয়া ওই সনদ ২০১৪ সালের ২৫ অক্টোবর সত্যায়িত করেছেন বরগুনা সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সমরজিৎ হাওলাদার। অধ্যাপক সমরজিৎ জানান, ২০০৯ সালে তিনি বরগুনা থেকে বদলি হয়েছেন। ২০১৪ সালে তার পক্ষে কারও সনদ সত্যায়নের সুযোগ নেই।

এ ছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটের ফলাফলে শিপ্রা সরকারের সনদের রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে সার্চ দিলে সমাপ্তি বিশ্বাসের নাম আসে।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বিষয়ে তদন্তে বরগুনা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাহমুদুল হক আজাদকে দায়িত্ব দেন। গত ২ জুন আজাদ প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তিনি বলেন, তদন্তের স্বার্থে অভিযোগকারীকে বরগুনায় আসতে চিঠি দিলেও আসেননি। পরে ডিএসবি রিপোর্ট অনুযায়ী তদন্ত প্রতিবেদন ডিজির দপ্তরে পাঠিয়েছি।
 

আরও পড়ুন

×