ইউএনওকে ফাঁসাতে গিয়ে ধরা খেলেন কৃষক লীগ নেতা

ফাইল ছবি
মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৪ | ১৮:৪৪
মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ আলম মিয়াকে ফাঁসাতে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি বানোয়াট অভিযোগ দেওয়া হয় খায়রুল ইসলামের নাম ব্যবহার করে। খায়রুল ইসলাম গোবিন্দশ্রী গ্রামের মৃত সুলতু মিয়ার ছেলে। তিনি ৬-৭ মাস ধরে জীবিকার তাগিদে চট্টগ্রামে পানি বিক্রি করছেন। এমন অভিযোগ শুনে গত ১ অক্টোবর গ্রামের বাড়িতে আসেন খায়রুল ইসলাম। খোঁজখবর নিয়ে ঘটনা জানার পর জেলা প্রশাসক বরাবর পাল্টা একটি অভিযোগ দেন তিনি।
খায়রুল ইসলাম জানান, তিনি একজন দরিদ্র অক্ষরজ্ঞানহীন মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে জীবিকা নির্বাহের জন্য বসবাস করছেন। গত ৪ সেপ্টেম্বর তাঁর ও তাঁর বাবার নাম ব্যবহার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি অভিযোগ দেওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সাংবাদিকরা অভিযোগ সম্পর্কে তাঁর কাছে ফোন করে ঘটনা জানতে চান। কিন্তু অভিযোগের ব্যাপারে কিছুই জানেন না তিনি। অথচ অভিযোগে তাঁর স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে। তাঁর দাবি, মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কোনো দিন যাননি তিনি এবং তাদের চেনেনও না। অহেতুক তাঁকে মিথ্যা অভিযোগকারী বানানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি জানতে পারি, আমার নাম ব্যবহার করে অভিযোগটি দায়ের করেছেন গোবিন্দশ্রী গ্রামের নূরুল আলম কামাল মণ্ডল। আমাকে হয়রানি করার জন্যই এমন অভিযোগ করা হয়েছে। আমি এর বিচার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর ২ অক্টোবর একটি অভিযোগ দিয়েছি।’
উপজেলা বিএনপির সভাপতি নূরুল আলম তালুকদারের ভাষ্য, গোবিন্দশ্রী গ্রামের মৃত সুলতু মিয়ার ছেলে খায়রুল ইসলামের নাম ব্যবহার করে এক ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নামে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। অথচ অভিযোগের বিষয়ে কিছুই জানেন না খায়রুল ইসলাম।
অভিযুক্ত উপজেলা কৃষক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কে এইচ এম নূরুল আলম কামাল মণ্ডল জানান, অভিযোগটি খায়রুলের হাত থেকে পাননি। অন্য একজন দিয়েছিল। কে দিয়েছিল, এ বিষয়ে জানতে চাইলে এড়িয়ে যান তিনি। কিছু লোক তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ আলম মিয়া বলেন, ‘গত মাসে আমার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পারি। আমি কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকলে কর্তৃপক্ষ অবশ্যই আমার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।’
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানান, গত ২ অক্টোবর খায়রুল ইসলামের একটি অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।