ছোট থেকে বড়, নষ্ট ৩৮৬ গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিটি স্ক্যান মেশিনটি আট মাস ধরে বিকল সমকাল
হাসান হিমালয়, খুলনা
প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৪ | ২৩:৫৩
খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে রেডিওলজি বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন পাইকগাছা উপজেলা থেকে আসা রহিমা বেগম। হাসপাতালে ভর্তি স্বামীর সিটি স্ক্যান করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। তাঁকে জানানো হয়েছে, সচল একটি সিটি স্ক্যান যন্ত্রে আপাতত শুধু মস্তিষ্কের স্ক্যান হচ্ছে। সিটি স্ক্যান করাতে তাঁকে বাইরে যেতে হবে।
শুধু রহিমা বেগমই নন, খুমেক হাসপাতালে বর্তমানে ছোট-বড় মিলে অন্তত ৩৮৬টি অতি জরুরি চিকিৎসা যন্ত্র নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। বাধ্য হয়ে নানা রকম গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা করতে বেসরকারি হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে হচ্ছে রোগীদের।
হাসপাতাল সূত্র বলছে, বর্তমানে বিভিন্ন বিভাগের ৩৮৬ প্রকারের যন্ত্রপাতি নষ্ট বা অচল অবস্থায় পড়ে আছে। এর মধ্যে পালস অক্সিমিটার (শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা পরিমাপের যন্ত্র), নেবুলাইজারের (শ্বাসগ্রহণ যন্ত্র) মতো ছোট যন্ত্র যেমন রয়েছে; তেমনি সিটি স্ক্যান, পোর্টেবেল এক্স-রে, ডায়ালাইসিস মেশিনের মতো বড় ও দামি যন্ত্রও রয়েছে। রেডিওলজি বিভাগে থাকা পাঁচটি এক্স-রে যন্ত্রের সবই ফিল্মের অভাবে এক মাস ধরে অচল পড়ে ছিল। কয়েক দিন আগে ফিল্ম আনায় যন্ত্রগুলো চালু হয়েছে। একই বিভাগে সিটি স্ক্যান মেশিন রয়েছে দুটি। এর মধ্যে একটি আট মাস ধরে নষ্ট। অন্য যন্ত্রটিতে শুধু মস্তিষ্কের স্ক্যান করা সম্ভব। কর্মরতরা জানান, সিটি স্ক্যানের দুটি যন্ত্রই সর্বাধুনিক এবং সর্বশেষ প্রযুক্তির। বেসরকারি ক্লিনিকেও এত ভালো যন্ত্র নেই। তার পরও এর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।
প্যাথলজি বিভাগের অটো অ্যানালাইজার মেশিন সচল থাকলেও রি-এজেন্টের অভাবে অচল পড়ে আছে। ২০২০ সালে যন্ত্রটি স্থাপনের পর আর রি-এজেন্ট কেনা হয়নি। যন্ত্রটি সচল থাকলে অল্প টাকায় সব ধরনের হরমোন পরীক্ষার সুযোগ পেতেন রোগীরা। ইলেকট্রো মেডিকেল টেকনিশিয়ান বিভাগ থেকে জানা গেছে, হাসপাতালের ছয়টি ইসিজি মেশিনের তিনটি, ১৬টি ফটোথেরাপি মেশিনের সব, দুটি সিটি স্ক্যান মেশিনের একটি, তিনটি ১০০ এমএ পোর্টেবল এক্স-রে মেশিনের দুটি, ৫০০ এমএ এক্স-রে মেশিন একটি, ছয়টি আলট্রাসনোগ্রাম মেশিনের চারটি, ১৯টি অ্যানেসথেশিয়া মেশিনের ৯টি, ৩০টি ওটি টেবিলের ২০টি, ১১টি ওটি লাইটের ছয়টি, একটি ডায়ালাইসিস মেশিন, একটি ডায়ালাইসিস রিপ্রেসর, ১২টি কার্ডিয়াক মনিটর, তিনটি আইসিইউ শয্যাসহ অসংখ্য যন্ত্রপাতি অচল পড়ে আছে।
এ বিষয়ে খুমেক হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মহসীন আলী ফরাজি বলেন, অচল যন্ত্রপাতির তালিকা এবং দ্রুত মেরামতের জন্য আমরা চিঠি দিয়েছি। ঢাকা থেকে টেকনিশিয়ানরা এসে দেখে গেছেন। দ্রুত যন্ত্রগুলো যাতে মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়, এ জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
- বিষয় :
- যন্ত্রপাতি