আশুগঞ্জ সার কারখানায় গ্যাসের চাপ কম, নেই উৎপাদন

আশুগঞ্জ সার কারখানা। ফাইল ছবি
আশুগঞ্জ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২২:১৪
দীর্ঘদিন পর আশুগঞ্জ সার কারখানার উৎপাদন বিভাগে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হলেও গ্যাসের চাপ কম। ফলে উৎপাদনে ফিরতে পারছে না কারখানাটি। বিতরণকারী সংস্থা বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (বিজিডিসিএল) কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হলেও মিলছে না সমাধান। অন্যদিকে অহেতুক গ্যাস পুড়িয়ে বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে কারখানা কর্তৃপক্ষকে। কারখানাটিতে ইউরিয়া সার তৈরি করা হয়।
বিজিডিসিএল ও এএফসিএল সূত্রে জানা গেছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কারখানার উৎপাদন বিভাগে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় বিজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ। কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিক-কর্মচারীরা বিভিন্ন সময় উৎপাদন বিভাগে গ্যাস সরবরাহের দাবি জানালেও কাজ হয়নি। গত ১৫ নভেম্বর বিজিডিসিএল গ্যাস সরবরাহ শুরু করলে কারখানা চালুর উদ্যোগ নেয় এএফসিএল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গ্যাসের চাপ কম থাকায় ইউরিয়া উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না।
কারখানা শ্রমিক নেতাদের দাবি, এতে একদিকে ইউরিয়া উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে কারখানা চালু রাখতে অহেতুক দৈনিক প্রায় পৌনে ২ কোটি টাকার গ্যাস বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। তারা জানান, কারখানার অবস্থান বিজিডিসিএলের কাছে। কর্তৃপক্ষ চাইলে নির্ধারিত চাপে গ্যাস দেওয়া সম্ভব। তবে বিজিডিসিএল কর্তৃপক্ষের দাবি, গ্রিড লাইনেই গ্যাসের চাপ কম বলে সমাধান আসছে না।
কারখানা সূত্র জানায়, কারখানায় সার উৎপাদন ও বিভিন্ন প্লান্ট পূর্ণ শক্তিতে চালু রাখতে ৪০ থেকে ৪২ বার চাপে (৫৮৮ থেকে ৬২০ পিএসআই) দৈনিক ৪৮ থেকে ৫২ এমএমসিএফ গ্যাসের প্রয়োজন। কিন্তু গ্যাস সংযোগ দেওয়ার পর গ্যাসের চাপ ঠিক থাকলেও পরে তা কমে যায়। মাঝে মাঝে চাপ ৩৫ বারের নিচেও নেমে আসে। ফলে চালু কারখানা উৎপাদনের মাঝপথে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। তবে বিজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ জানায়, দেশে গ্যাসের উৎপাদন ও এলএনজি আমদানি কম থাকায় গ্যাসের জাতীয় গ্রিড পাইপলাইনে চাপ কম।
কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রদীপ কুমার নাথ এ ব্যাপারে কারখানার সিবিএ নেতাদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। কারখানার সিবিএর সাধারণ সম্পাদক আবু কাউছার বলেন, দৈনিক প্রায় পৌনে ২ কোটি টাকার গ্যাস পোড়ানো হলেও ইউরিয়া উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। গ্যাস বিতরণকারী কর্তৃপক্ষ বিজিডিসিএল ইচ্ছে করলেই গ্যাসের চাপ বাড়িয়ে দিতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
এ ব্যাপারে বিজিডিসিএলের ডিজিএম (সঞ্চালন) প্রকৌশলী জাহিদুর রেজা বলেন, গ্যাসের জাতীয় গ্রিডের পাইপলাইনে গ্যাসের সরবরাহ কম, ফলে নির্ধারিত চাপে কারখানায় গ্যাস দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সমস্যা সমাধানে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
- বিষয় :
- সার কারখানা
- গ্যাস
- আশুগঞ্জ