বান্দরবানে পাহাড় ধসে রুমার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে অনীহা তবুও ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস

শহরের বালাঘাটা আমবাগান এলাকায় বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। ছবি: সমকাল
বান্দরবান প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৫ | ২২:০৯
বান্দরবানে বৃহস্পতিবার রাত থেকে থেমে থেমে অতি ভারি বর্ষণ শুরু হয়েছে। ভারী বর্ষণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে পাহাড়ের পাদদেশ। পাহাড় ধসের আশঙ্কায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের সতর্ক করতে শহরে প্রশাসন ও পৌরসভার পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। এরপরও বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে অনীহা দেখাচ্ছেন ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের বসবাসরত এলাকার বাসিন্দারা।
এদিকে ভারি বৃষ্টির কারণে শুক্রবার দুপুর থেকে বান্দরবান জেলা সদরের সঙ্গে রুমা উপজেলার সরাসরি সড়র যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। রুমা সড়কের ওয়াই জংশন এলাকার একটু দূরে পাহাড় ধসে রাস্তার ওপর পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, বান্দরবানে সদরসহ সাত উপজেলায় ২২০টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত আছে। বান্দরবান সদর উপজেলায় ৪৬টি, রুমা উপজেলায় ২৮টি, রোয়াংছড়ি উপজেলায় ১৯টি, থানচি উপজেলায় ১৫টি, লামা উপজেলায় ৫৫টি, আলীকদম উপজেলায় ১৫টি এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ৪২টি। দুর্যোগ মোকাবেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
শুক্রবার ভোর থেকে থেমে থেমে অতি ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে কিছু কিছু এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসরত লোকজনের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গত এক দশকে বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনায় প্রায় হারিয়েছে অন্তত ১০৫ জনের অধিক।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত বান্দরবানে সর্বমোট বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে ২২২ মিলিমিটার। অতি ভারি বর্ষণে কারণে বান্দরবানসহ চারটি পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বান্দরবানে শহরে আর্মিপাড়া, বালাঘাটা আমবাগান পাড়া, লেমুঝিড়িসহ যেসব নিম্নাঞ্চলে বাড়িঘর রয়েছে; সেসব এলাকায় বেশ কিছু বসতঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। টানা বর্ষণ থাকার ফলে বান্দরবানের সাঙ্গু ও মাতামুহুরি নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে শুরু করেছে। সাঙ্গু নদী ঘেঁষে উঠা বসতঘরগুলো কিনারায় পৌঁছেছে পানি। সেসব ঘরে থাকার জিনিসপত্র নিয়ে আগাম আশ্রয় কেন্দ্র যাওয়া প্রস্তুতি নিচ্ছে অনেকেই।
বনরুপা, বীর বাহাদুর নগর ও আর্মিপাড়া বাসিন্দা মনজেল আলম, খুরশিদা আক্তার ও মর্জিনা বলেন, সামান্য কিছু টাকা দিয়ে জায়গা কিনে পাহাড়ে ওপর ঘর করেছি। সমতলে কেনার সামর্থ্য আমাদের সাধ্য বাইরে। তাই বৃষ্টি হলে পাহাড় ধসের আতঙ্ক নিয়ে রাত জেগে থাকি। এছাড়া আমরা যাবোইবা কোথায়। আর ম্যাকসি খাল ছোট্ট হওয়াই অল্প বৃষ্টি হলে ঘরে ভিতর পানি ঢুকে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি জানান, পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি আগের তুলনা বেড়ে গেছে। সেই অনুসারেই বন্যায় প্লাবিত এলাকা ও ভূমি ধসের ঘটনা যেখানে ঘটেছিল সেগুলোকে ফোকাস করে একটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।