ভয়ে ঘর থেকে বের হয় না, মাদ্রাসায়ও যায় না শিশুটি

প্রতীকী ছবি। এআই দিয়ে তৈরি
ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫ | ১৯:০২ | আপডেট: ১৯ জুন ২০২৫ | ১৯:৩৯
নিজের বাড়িতেই ধর্ষণের শিকার হয়েছে তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। মেয়েটি এখন আর ঘর থেকে বের হয় না, ভয় পায়। অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলতে যায় না। মাদ্রাসায়ও যায় না। অনেক দুঃখ প্রকাশ করে এসব কথা জানান শিশুটির বাবা।
তিনি জানান, ধর্ষণের ঘটনায় সাইফুল ইসলাম নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করে বিপাকে পড়েছেন। মামলার ১৪ দিনেও আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। উল্টো আসামির পরিবারের হুমকিতে আতঙ্কে দিন কাটছে তার পরিবারের। ঘটনাটি ঘটেছে ঘাটাইল উপজেলার একটি গ্রামে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৩ জুন বিকেলে বাড়িতে একা পেয়ে ১১ বছরের শিশুটিকে ধর্ষণ করে স্থানীয় যুবক সাইফুল। শিশুটির দাদি বাড়িতে এসে ঘরের দরজায় ধাক্কা দিয়ে সাইফুলকে দেখতে পান। তখন দৌড়ে পালিয়ে যায় সাইফুল।
শিশুটির বাবা জানান, তার মেয়েকে ছোট রেখে স্ত্রী অন্যত্র চলে যায়। দাদির কাছে বড় হচ্ছে মেয়েটি। স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। ঘটনার দিন তিনি অটোরিকশা চালাতে বাড়ির বাইরে ছিলেন। মেয়ের দাদিও বাড়িতে ছিলেন না। এই সুযোগে তার মেয়ের সর্বনাশ করে সাইফুল। ঘটনার পর থানায় মামলা করেছেন। ১৪ দিন পার হলেও আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। প্রথম দুই-তিন দিন পুলিশ আসামি ধরতে আগ্রহ দেখালেও এখন তা দেখা যাচ্ছে না।
তিনি আরও জানান, আসামি সাইফুলের বাবা প্রবাসী এবং অনেক টাকার মালিক। মামলা করায় সাইফুলের চাচা জয়নাল আবেদিন, আব্দুল কদ্দুস ও মফিজ উদ্দিন তাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। একদিন রাস্তায় দেখা পেয়ে বলেন ‘মামলা করলি, পুলিশ দিয়া তো ধরাবার পাইলি না। দিন এইডা না, দিন সামনে আবো। আমরা ধান (বিএনপি) করি। টেহা (টাকা) দিয়া জজ কিনা ফালামু। আমাগো পোলারে জামিন করামু।’ তাড়াতাড়ি আপস না করলে হাত-পা ভেঙে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বাদী। তবে হুমকি দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন আসামি সাইফুল ইসলামের চাচা আব্দুল কদ্দুস।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ঘাটাইল সাগরদীঘি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক আব্দুল মতিন। মেয়েটির বাবা বলেন, আসামির পরিবার থেকে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি তদন্ত কর্মকর্তাকে কয়েক দফা ফোনে জানানো হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল মতিন বলেন, হুমকি দেওয়ার বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার জন্য বাদিকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আসামি ধরতে একাধিক অভিযান চালানো হয়েছে বলে সমকালকে জানান তিনি।
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশাররফ বলেন, 'ঘটনার তিন দিন পর শিশুটির বাবা থানায় এসে মামলা করেন। এরমধ্যে আসামি বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। আসামি ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে।'