ভোক্তা অধিকার কার্যালয়ে শুনানির সময় অভিযোগকারীর ওপর হামলা, বিএনপি নেতাসহ গ্রেপ্তার ৬

আসামিদের শুক্রবার রাজবাড়ীর আদালতে পাঠানো হয়েছে
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৫ | ১৪:১৫ | আপডেট: ২৭ জুন ২০২৫ | ১৫:১৪
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজবাড়ী জেলা কার্যালয়ে দুই পক্ষের শুনানির সময় অভিযুক্ত পক্ষের লোকজন সহকারী পরিচালক কাজী রকিবুল হাসান ও অভিযোগকারীর ওপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকে পাংশা উপজেলা বিএনপির সভাপতি চাঁদ আলী খানসহ ছয়জনকে আটক করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজবাড়ী শহরের বড়পুল এলাকায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
আটক অন্যরা হলেন, অভিযুক্ত টাইলস ব্যবসায়ী পাংশার নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. রুহুল আমিন মুকুল, পাংশা উপজেলা বিএনপির সদস্য শেখ পাড়া গ্রামের মো. বাচ্চু বিশ্বাস, রাজবাড়ী শহরের ভবানিপুর এলাকার মামুন শিকদার, মো. ফরিদ হোসেন ও শিশির করীম। এ ঘটনায় ভোক্তার সহকারী পরিচালক কাজী রকিবুল হাসান বাদী হয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা করেছেন।
রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মো. মাহমুদুর রহমান জানান, এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ভোক্তার সহকারী পরিচালক কাজী রকিবুল হাসান বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। শুক্রবার আসামিদের রাজবাড়ীর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, বালিয়াকান্দি উপজেলার একজন তরুণী পাংশার কলেজ রোডে অবস্থিত রুহুল আমিন মুকুলের মালিকানাধীন মেসার্স মুকুল ট্রেডার্স থেকে টাইলস কেনেন। যে মানের টাইলস দেওয়ার কথা তা না দেওয়ায় ওই তরুণী ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর রাজবাড়ী জেলা কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজবাড়ী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কাজী রকিবুল হাসান বলেন, ‘২ জুন বালিয়াকান্দির বাসিন্দা জেসমিন সুলতানা পাংশার টাইলস ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান মেসার্স মুকুল ট্রেডার্সের বিরুদ্ধে তাদের কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটে শুনানির সময় ধার্য করা হয়। তার অফিসটি তিন তলায়। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান দুই মাইক্রোবাসে লোকজন নিয়ে আসে। তার কক্ষে ছয়টি চেয়ার আছে। এ কারণে দুই পক্ষকে বলেন, তিনজন করে থাকতে। নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে তিনি অভিযোগকারীর বক্তব্য শোনেন। অভিযুক্ত ব্যক্তির বক্তব্যে বিঘ্ন সৃষ্টির অজুহাতে অভিযোগকারীর ওপর চড়াও হয় অভিযুক্ত পক্ষ। ওই সময় অভিযুক্তরা ওই নারীকে বলেন, তোকে আগেই বলেছিলাম সমাধান করে নিতে। তা না করে এখানে অভিযোগ করেছিস। এ কথা বলেই ওই নারীর গায়ে হাত তোলে। এতে ওই নারী পড়ে যান। তিনি তখন চেয়ার থেকে উঠে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বাইরে যেতে বলেন। তিনি মোবাইল হাতে নিয়ে ফোন করতে গেলে তার ওপর চড়াও হয়। তাকে ধমকের সুরে তুই তোকারি করে কথা বলতে থাকেন। এক পর্যায়ে আমার হাত থেকে ফোন কেড়ে নেয়। ওই সময় বাইরে অপেক্ষমান অভিযুক্ত পক্ষের লোকজন শোরগোল শুরু করলে তাদের ভবনে দ্বিতীয় তলায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা এগিয়ে আসে। অভিযুক্ত পক্ষের লোকজন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকদের ওপরও চড়াও হয়। পরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা অভিযুক্ত পক্ষের কয়েকজনকে আটকে রাখে। বিষয়টি তিনি তাৎক্ষণিক রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে জানালে সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছয়জনকে আটক করে নিয়ে যায়। রাতেই তিনি রাজবাড়ী সদর থানায় এজাহার দায়ের করেছেন। অভিযোগকারী ওই নারীকে নিরাপদে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’