ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

আ'লীগের ব্যর্থতায় জিয়াউর রহমানের উত্থান: খন্দকার মোশাররফ

আ'লীগের ব্যর্থতায় জিয়াউর রহমানের উত্থান: খন্দকার মোশাররফ

জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন- সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২২ | ০২:২৩ | আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২২ | ০২:২৪

আওয়ামী লীগ ও তাদের নেতাদের ব্যর্থতার কারণে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের উত্থান হয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত করার দাবি জানান। ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে ‘বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। 

ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ডা. মো. আবদুস সালাম, ডা. মেহেদী হাসান ও ডা. সায়ীদ মেহবুব উল কাদিরের পরিচালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, ড্যাবের কেন্দ্রীয় নেতা ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, ডা. শহিদুল আলম, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম, ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডা. মো. আদনান হাসান মাসুদ, ডা. সায়ীদ মেহবুব উল কাদির, ডা. শহিদুল ইসলাম, ডা. শহিদুর রহমান, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ডা. মো. ফখরুজ্জামান ফখরুল প্রমুখ। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে ডা. নিলোফা ইয়াসমিন, প্রকৌশলী খালিদ হাসান পাহিন, আমিনুল ইসলাম, ডা. শহিদুল হাসান বাবুল, ডা. আবুল কেনান, ডা. মো. শামসুল আলম, ডা. রিদওয়ানুল ইসলাম, ডা. সরকার মাহবু আহমেদ শামীম, ডা. দিদারুল আলম, ডা. শহিদুল ইসলাম, ডা. হারুন অর রশিদ রাকিব, ডা. আবু হেনা চৌধুরী, ডা. শাকিল রহমান, ডা. রাকিবুল ইসলাম আকাশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের তরিকুল ইসলাম তারিক সহ ড্যাবের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দেশের টার্নিং পয়েন্ট ছিলো ৭ নভেম্বর। যা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ৭২-৭৫ পর্যন্ত যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা দেশের গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল কায়েম করেছিল। এরপর দেশে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছিলো। তাদের নেতা আক্ষেপ করে বলেছিলেন, সবাই পায় সোনার খনি আর আমি পেলাম চোরের খনি। সে সময় দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছিলো। রক্ষী বাহিনীর দ্বারা ৩০ হাজার লোককে হত্যা করেছিলো। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা গণতন্ত্রকে ভুলুণ্ঠিত করা হয়েছিলো। ১৫ আগস্টের মর্মান্তিক ঘটনা কারা ঘটিয়েছে এটা পরবর্তী সরকার যারা প্রতিষ্ঠা করেছে সেখানে পরিষ্কার হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘তৎকালিন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটিয়ে আরেকটি আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে। এরপর ২ নভেম্বর রাত থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কোন্দলের কারণে আরেকটি সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান ঘটে। এ সময় জিয়াউর রহমানকে পদত্যাগে বাধ্য করে ও তাকে বন্দি করে। অনেক ঘটনা পাল্টা ঘটনা ঘটে। সে সময় ৩-৬ নভেম্বর পর্যন্ত সরকার ছিলো না। রেডিও, টিভি বন্ধ ছিলো। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হারিয়ে যাওয়ার গুঞ্জন শুরু হয়েছিলো।’

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ঠিক সেসময় ৭ নভেম্বর দেশের সিপাহী জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করা হয়েছিলো। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরায় প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এ জন্য ৭ নভেম্বর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। দুটি বিষয় দেশের মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িত, একটি- জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা, আরেকটি ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার বিপ্লব। অর্থাৎ দুইটি বিশেষ দিনে জিয়াউর রহমান জাতিকে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। রাজনৈতিক নেতাদের ব্যর্থতার কারণে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে জাতিকে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তেমনি ৩-৬ নভেম্বর যখন রাজনৈতিক নেতাদের ব্যর্থতা তখনও জিয়াউর রহমান জাতিকে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সিপাহী জনতা জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করে সেনাপ্রধান বানিয়েছিলেন। যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। কিন্তু আওয়ামী লীগ এই দিনকে গুরুত্ব না দিয়ে ‘মুক্তিযোদ্ধা হত্যা দিবস’ পালন করছে। আসলে তারা পরিবর্তন সহ্য করতে পারে না। আমাদের নেতা জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা সহ্য করতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘একটি আধুনিক উন্নত ও স্বনির্ভর দেশ গড়তে মনোনিবেশ করেন জিয়াউর রহমান। তিনি দেশকে স্বয়ংসম্পন্ন করেছিলেন। অর্থনীতি পুনর্গঠনের লক্ষ্যে শিল্প খাতে বিনিয়োগ করেন। মুক্তবাজার অর্থনীতি চালু করেন। রাস্তায় হেঁটে হেঁটে মানুষকে সংগঠিত ও উজ্জীবিত করেছিলেন। গ্রাম সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেনাবাহিনীতে আধুনিকায়ন করেন। আজকে আওয়ামী লীগ জিয়াউর রহমানকে সহ্য করতে পারে না। তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করছেন। অর্থাৎ যেখানে আওয়ামী লীগ ও তাদের নেতারা ব্যর্থ। সেখানে জিয়াউর রহমান সফল। যার প্রমাণ ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার বিপ্লব।’

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজকেও দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে অবৈধ ভোট ডাকাতির সরকার। তারা অর্থ পাচারের মাধ্যমে দেশকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গেছে। আমার যেসব বিষয় নিয়ে এতদিন বলে আসছি। আজকে আইএমএফ কিন্তু সেগুলো নিয়ে ঠিকই প্রশ্ন করছে। কেনো তেলের দাম বেড়েছে? কেনো প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ হয়না? আর আজকে গায়ের জোরের প্রধানমন্ত্রী বলছেন দেশে দুর্ভিক্ষ আসবে।’

তিনি বলেন, ‘আজকে দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। কারণ এই সরকার সবক্ষেত্রে ব্যর্থ। দেশে মানবাধিকার লংঘনের কারণে আমেরিকা বাংলাদেশের একটি সংস্থা ও র্যাবের কর্মকর্তাকে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। দেশে নিতপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। এখান থেকে দেশের মানুষ মুক্তি চায়। আজকে তারা দেশের অর্থনীতি পুনর্গঠনের চিন্তা না করে বিএনপির বিরুদ্ধে লেগে আছে। আমাদের সমাবেশে বাধা দিচ্ছে।’

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘এই সরকার এমনিতে যাবে না। আইয়ুব খান যায়নি। এরশাদ যায়নি। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাদের বিদায় হয়েছে।’

আরও পড়ুন

×