ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র মানুষের নিরাপত্তার দিক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ: মঈন খান

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র মানুষের নিরাপত্তার দিক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ: মঈন খান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। ফাইল ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৩ | ১২:১৫ | আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৩ | ১৪:১৭

সময়ের পরিক্রমায় পারমাণবিক শক্তির জৌলুশ আগের মতো নেই, উল্লেখ করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সরকারের উচ্ছ্বাসের সমালোচনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। তিনি বলেন, ‘আজকে পারমাণবিক শক্তি নিয়ে কেউ আর বাহাদুরি করে না। যারা একসময় এ নিয়ে বাহাদুরি করত, তারা এখন এটা প্রত্যাখ্যান করেছে। আজকে বাংলাদেশের সরকার সেই অপ্রয়োজনীয় জিনিস আঁকড়ে ধরে বাহাদুরি নিতে চাচ্ছে। এটা বাচ্চা ছেলের কাজ। যারা দেশ নিয়ে ভাবে, তারা এসব ছেলেমি করতে পারে না।’

বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির মিডিয়া সেলের উদ্যোগে ‘পরিবেশ ও মানব বিপর্যয়ের আশঙ্কা উপেক্ষা করে দুর্নীতিগ্রস্ত রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ- একটি রাষ্ট্রীয় অপরিণামদর্শিতা’- শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প সরকারের দুর্নীতির আরেকটি জ্বলন্ত প্রমাণ বলে মন্তব্য করে আবদুল মঈন খান বলেন, ‘ভারতের তামিলনাড়ুর কুদামকুলীনে একই মডেলের ২ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ব্যয় ৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে সম্পন্ন হলেও একই কোম্পানির রূপপুর প্রকল্পের ব্যয় দ্বিগুণেরও বেশি কেন? এটি মূলত সরকারের অব্যাহত দুর্নীতির একটি জ্বলন্ত প্রমাণ।’

ড. মঈন খান বলেন, ‘কতটা মূল্য দিয়ে, কোন কোন যুক্তির ভিত্তিতে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলো? রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প যেন বাংলাদেশের দুঃশাসন ও দুর্নীতির এক প্রতীক। বিগত সময়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের আওতাধীন আবাসন ও বালিশকাণ্ডের অবিশ্বাস্য দুর্নীতিই মূল প্রকল্পে দুর্নীতির ব্যাপকতা প্রমাণ করে। ১২ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলারের প্রাক্কলিত এই প্রকল্প নিশ্চিতভাবে ২০ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়াবে। যার ১২ বিলিয়নের ওপর রাশিয়ার সাপ্লাই ক্রেডিট। আওয়ামী অর্থনৈতিক দুঃশাসনের অন্যতম মাধ্যম হলো- এই সাপ্লাইয়ার্স ক্রেডিট। কীভাবে এই প্রকল্পে বিপুল ব্যয় নিরূপণ হলো, কোন অর্থনৈতিক সমীক্ষার মাধ্যমে এই ব্যয়ের বাণিজ্যিক কার্যকারিতা নিরুপণ করা হয়েছে- সেটা কখনোই জনসম্মুখে আসেনি।’

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাংলাদেশের মতো জনঘনত্বপূর্ণ একটি দেশের জন্য অপরিণামদর্শিতার একটি জলন্ত উদাহরণ বলে মন্তব্য করেন ড. মঈন খান। তিনি বলেন, ‘কোনো যথার্থ বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা ছাড়াই এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে এখানে দুই ধরনের বিপর্যয় স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের অন্তরালে রয়েছে সীমাহীন দুর্নীতি এবং ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা। অপরিণামদর্শী এই সরকারকে একদিন ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে। বাংলাদেশ কখনো তাদের ক্ষমা করবে না।’

আলোচনা সভায় বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, বিএনপি নেতা ড. ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

আরও পড়ুন

×