ছাপ রেখে যেতে চান বুলবুল

বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৫ | ১২:১০
আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল এপ্রিলের শেষ দিকে। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার কাছ থেকে ফোনে প্রস্তাবটা পেয়েছিলেন তিনি। লোভনীয় এ প্রস্তাব গ্রহণ করতে কালবিলম্ব করেননি বুলবুল। তিনি রাজি হওয়ায় কপাল পোড়ে আরেক সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদের। কারণ তাঁকে অপসারণ করে বিসিবির ১৭তম সভাপতি করা হয় বুলবুলকে।
বিসিবি ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের গঠনতন্ত্রের নিয়মের সুবিধায় সভাপতি হওয়া বুলবুল গতকাল দায়িত্ব বুঝে নেন। বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) ফারুকের পরিচালক পদের মনোনয়ন বাতিল ও বুলবুলকে কাউন্সিলর করে। গতকাল পরিচালক হিসেবে মনোনীত হওয়ার পর বিকেলে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বিসিবির সভায় পরিচালকদের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হন। এনএসসির নির্দেশনায় ৯ জন পরিচালকের সমর্থন পান তিনি। জাতীয় দলের সঙ্গে পাকিস্তানে থাকা নাজমুল আবেদীন ফাহিম জুমে মিটিংয়ে যোগ দেন। বুলবুলের সভাপতি হওয়ার দিনে নাজমুল আবেদীন ও ফাহিম সিনহাকে সহসভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এ দুটি পদই দীর্ঘদিন ধরে শূন্য ছিল।
বিসিবি সভাপতি নির্বাচিত হয়ে সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করেন বুলবুল। যেখানে গত বছরের ২১ আগস্ট উৎসবমুখর পরিবেশে সভাপতি হিসেবে অভিষেক সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন ফারুক। একই চেয়ারে বসে বুলবুল বলেন, ‘আপনাদের কাছ থেকে আমি শত শত প্রশ্ন পেতাম, আপনাকে ডাকা হয় আপনি আসেন না কেন? সত্যিকার অর্থে এই প্রথম গত মাসের (এপ্রিল) শেষদিকে আমি একটা কল পাই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে (এনএসসি) এবং বলা হয় যে আপনাকে একটা সুযোগ দেওয়া হবে, আপনি কী সুযোগ গ্রহণ করবেন? আমি ওয়েট করতাম এরকম একটা কলের জন্য। যখন এই কল পেয়েছি, তখন আর পেছনে তাকাইনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি এই কলটা পেয়েছিলাম আমাদের সম্মানিত স্পোর্টস উপদেষ্টার কাছ থেকে।’ অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য সভাপতি হলেও দেশের ক্রিকেট উন্নয়নে ছাপ রেখে যেতে চান বুলবুল, ‘আমি সম্মানিত যে এই রকম একটা কল পেয়েছি; যার ফলে এই দায়িত্বটা পেয়েছি। এই দায়িত্বটা বাংলাদেশের ক্রিকেট না, ক্রিকেট ইন বাংলাদেশ। বাংলাদেশে কী ক্রিকেট আছে চেষ্টা করব, সেটি সামনের দিকে এগিয়ে নিতে। আমি বিশ্বাস করি ১১ জন ক্রিকেট খেলে না, বাংলাদেশের সবাই ক্রিকেট খেলে।’
বুলবুল দেশে ফিরে সমকালকে জানিয়েছিলেন, তিনি সীমিত সময়ের জন্য বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব নিচ্ছেন। পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ শেষে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন দিয়ে নিজের কাজে ফিরে যেতে চান তিনি। এই নতুন জার্নিকে টি২০ গেমের সঙ্গে তুলনা করেন বুলবুল, ‘আমরা জানি যে টেস্ট ম্যাচ পাঁচ দিনের হয়। ওয়ানডে হয় সাত ঘণ্টার। আমি একটা কুইক টি২০ ইনিংস খেলতে এসেছি। একটি ভালো টি২০ ইনিংস খেলব, যেটি আপনারা দীর্ঘদিন মনে রাখবেন। চেষ্টা করব, ক্রিকেটটা যাতে সবাই খেলতে পারে, যাতে সবার খেলা হয়। যেন একটা স্টেটমেন্ট হয়, ক্রিকেটটা সবার জন্য। এই ধারাটা শুরু করে দিয়ে যেতে চাই।’
দেশের দ্বিতীয় ক্রিকেটার সভাপতি বুলবুল ১৯৯৯ বিশ্বকাপে জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ড ও পাকিস্তানকে হারায় বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের পর নেতৃত্ব হারালেও অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করে ইতিহাস গড়েন তিনি। ১৩ টেস্ট ও ৩৯ ওয়ানডে খেলা বুলবুল ক্রিকেটকে বিদায় বলেন ২০০৩ সালে। তিনি আফগানিস্তান, নেপাল, মালয়েশিয়া, ভুটান, থাইল্যান্ড, ইরান, চীনসহ অনেক দেশেই ক্রিকেট উন্নয়নে কাজ করেছেন এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) কোচ ও ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে।
- বিষয় :
- বিসিবি
- বিসিবি সভাপতি
- আমিনুল ইসলাম বুলবুল