ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

কুমিল্লায় দুই ট্রেনের সংঘর্ষ, ৭ বগি লাইনচ্যুত

কুমিল্লায় দুই ট্রেনের সংঘর্ষ, ৭ বগি লাইনচ্যুত

ছবি- সংগৃহীত

কুমিল্লা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৩ | ১৩:৪৯ | আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৩ | ১৬:৫৬

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার হাসানপুর রেলওয়ে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কায় যাত্রীবাহী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের ৭টি বগি ও ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়েছে। আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এতে প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন।

ভুল সিগন্যালে দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে রেল পুলিশ। বিরতিহীন সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় যাচ্ছিল।

দুর্ঘটনার কারণে চট্টগ্রামের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। রাত ৯টার দিকে দুটি রেলপথের একটিতে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তবে যে লাইনে দুর্ঘটনা ঘটে সেটি রাত ১০টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চালু হয়নি।

লাকসাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন চৌধুরী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

জসিম উদ্দিন বলেন, মালবাহী ট্রেনটি হাসানপুর স্টেশনে দাঁড়িয়েছিল। চট্টগ্রাম থেকে আসা সোনার বাংলা এক্সপ্রেস একই লাইনে ঢুকে পেছন থেকে মালবাহী ট্রেনটিকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সোনার বাংলা এক্সপ্রেসকে ক্রসিং দিতে মালবাহী ট্রেনটি হাসানপুর স্টেশনের লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল। কিন্তু সোনার বাংলা এক্সপ্রেস একই লাইনে চলে আসে। এ সময় যাত্রীবাহী ট্রেনটি মালবাহী ট্রেনটির পেছনে ধাক্কা দেয়। ধাক্কা খেয়ে সোনার বাংলার ইঞ্জিন রেললাইন থেকে ছিটকে যায়। ইঞ্জিনের পেছনে থাকা দু'টি বগি একটি আরেকটির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ধুমড়ে মুচড়ে যায়।

নাঙ্গলকোট হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া কয়েকজন যাত্রী জানান, সোনার বাংলার গতি কিছুটা কম ছিল। কিছু বুঝে উঠার আগেই ট্রেনটি প্রচণ্ড শব্দে ধাক্কা খায়। এ সময় বগিগুলো লাইন থেকে ছিটকে পড়ে। 

রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) আবিদুর রহমান সমকালকে বলেছেন, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে বিভাগীয় ট্রাফিক কর্মকর্তার (ডিটিও) নেতৃত্বে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে।

দুর্ঘটনার কারণ জানতে চাইলে আবিদুর রহমান বলেন, রেয়ার কলিশন ঘটেছে। সিগন্যালে ভুল থাকতে পারে। পয়েন্টেসম্যানের ভুল হতে পারে। যাত্রীবাহী ট্রেনের চালক হয়তো সিগন্যাল বাতি দেখেননি। তবে ঠিক কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা তদন্তের পর বলা যাবে। 

রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলমের বরাত দিয়ে রেল মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা শরীফুল আলম জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের তিনটি এসি চেয়ার, চারটি শোভন চেয়ার বগি এবং ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়।

তবে এ ঘটনায় কারও মৃত্যু হয়নি বলে জানিয়েছেন লাকসাম রেলওয়ে পুলিশের ওসি জসিম উদ্দিন। রাত সোয়া ৯টার দিকে তিনি জানান, কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি।   

এদিকে দুর্ঘটনার পর লাকসাম থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম, রেলওয়ে (জিআরপি) পুলিশ, নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী অফিসার রায়হান মেহেবুবও ঘটনাস্থলে আসেন। তবে হাসানপুর রেলস্টেশনের মাস্টারসহ অন্য কর্মচারীদের স্টেশনে পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন

×