ঢাকা মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫

বিভাগদী শহীদস্মৃতি মহাবিদ্যালয়

উপবৃত্তির বেহাত টাকা ফেরতে উদ্যোগ নেই

উপবৃত্তির বেহাত টাকা ফেরতে উদ্যোগ নেই

ফরিদপুর অফিস ও সালথা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বিভাগদী শহীদস্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে দাবি করে গত ১ জুন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচির স্কিম পরিচালক আসাদুল হক বরাবর অভিযোগ জানিয়েছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া ৪ জুন সালথা থানায় জিডিও করা হয়। এরপর প্রায় দেড় মাস পার হলেও শিক্ষার্থীরা এর কোনো প্রতিকার পায়নি বলে জানিয়েছে। ফলে কলেজটির শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা উত্তোলনে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। অভিভাবকরাও পড়েছেন বিপাকে। অভিযোগ আমলে নিয়ে উপবৃত্তির টাকা উত্তোলনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া ৮১ শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের সমন্বিত উপবৃত্তির জন্য আবেদন করে। যাচাই-বাছাই শেষে ৬১ শিক্ষার্থীর উপবৃত্তি মঞ্জুর করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এরপর আবেদনের সময় সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে সঠিকভাবে ডাটা এন্ট্রিও করা হয়। কিন্তু পরে দেখা যায়, অনুমোদনকৃত ৬১ জনের মধ্যে ৪৪ শিক্ষার্থীর অ্যাকাউন্ট নম্বর ও অভিভাবকের নাম ভুল এসেছে। বাকি ১৭ শিক্ষার্থীর সব তথ্য সঠিক আছে।

কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম বলছেন, উপবৃত্তির টাকা সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের অ্যাকাউন্টে চলে যায়। তবে তাদের নাম ওয়েবসাইটে এন্ট্রি করতে হয় কলেজের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে। সে অনুযায়ী কলেজ কর্তৃপক্ষ সঠিকভাবেই শিক্ষার্থীদের নাম এন্ট্রি করেছিল। কিন্তু পরে দেখা যায়, ৪৪ শিক্ষার্থীর অ্যাকাউন্ট নম্বর ও অভিভাবকের নাম ভুল এসেছে। আমাদের ধারণা, হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে কেউ কলেজের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের অ্যাকাউন্টের জায়গায় অন্য অ্যাকাউন্টের নম্বর বসিয়ে দিয়েছে। সেই সঙ্গে অভিভাবকদের নাম পরিবর্তন করে বিভিন্ন এলাকার কথিত ব্যক্তির নাম বসানো হয়েছে। ফলে ওই ৪৪ শিক্ষার্থী এখনও উপবৃত্তির টাকা পায়নি। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ১২ হাজার টাকা পাওয়ার কথা ছিল।

একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ শেখের ভাষ্য, প্রধানমন্ত্রী এই উপবৃত্তির টাকা আমাদের উপহার হিসেবে দেন। আমাদের সেই অধিকারের টাকা হ্যাক করে অন্য কেউ নিয়ে যাবে, এটা আমরা মানব না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, তিনি যেন আমাদের উপবৃত্তির টাকা ফেরত আনার ব্যবস্থা করতে প্রকল্প কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন।

সালথা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বিনয় কুমার চাকি জানান, এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের কোনো ভূমিকা নেই। এই সফটওয়্যার প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচির কর্মকর্তারা নিয়ন্ত্রণ করেন। হ্যাক হয়ে টাকা বেহাত হলে তারাই এটার সমাধান করতে পারবেন।

সালথার ইউএনও আক্তার হোসেন বলেন, ‘টাকা বেহাত হওয়ার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচির প্রকল্প পরিচালককে সমাধানের জন্য জানানো হয়েছে।’ প্রতিষ্ঠানটির আরেক শিক্ষক বলেন, স্কুলের পক্ষ থেকে কর্তৃপক্ষকে সব কাগজপত্র দেওয়া হলেও তারা কেন গুরুত্ব দিচ্ছে না, তা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাই ভালো বলতে পারবেন।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচির স্কিম পরিচালক আসাদুল হকের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

আরও পড়ুন

×