ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

নির্বাচনী বিরোধ ঘিরে সংঘর্ষ-অগ্নিসংযোগ, ইউপি চেয়ারম্যানসহ আহত ২০

নির্বাচনী বিরোধ ঘিরে সংঘর্ষ-অগ্নিসংযোগ, ইউপি চেয়ারম্যানসহ আহত ২০

ছবি: সংগৃহীত

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪ | ২০:২৫

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের নির্বাচনী বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ও ফাঁকা গুলির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারসহ উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়াকে হারিয়ে ১ লাখ ১১ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। শাহজাহান ভূঁইয়ার পক্ষে কাজ করেন দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারসহ তার লোকজন। মঙ্গলবার দুপুরে দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে কম্বল বিতরণের আয়োজন করেন ইউপি চেয়ারম্যান। একই সময় দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের গেটের সামনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নির্বাচনী পরবর্তী আলোচনা সভার আয়োজন করেন গোলাম দস্তগীর গাজীর সমর্থিত স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। একই জায়গায় পাশাপাশি দুটি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের লোকজন জমায়েত হতে থাকেন। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

দুপুর দেড়টার দিকে দুই পক্ষের লোকজন লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে হামলাকারীদের একটি পক্ষ ইউনিয়ন পরিষদের প্রধান গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। এ সময় তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের গাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়। আগুনে গাড়িটি পুড়ে যায়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ইউপি চেয়ারম্যানসহ তার লোকজন অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে আরেকটি পক্ষের হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনাও ঘটে। খবর পেয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং অবরুদ্ধ চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করা হয়। পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গাড়ির আগুন নেভান। 

এদিকে, আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুরের প্রতিবাদে স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেন।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টার বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নামধারী সন্ত্রাসীরা আমার লোকজনের উপর হামলা, গাড়ি ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করেন। চেয়ার টেবিল ভাঙচুর চালান। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়েছে।’ 

দাউদপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনী পরবর্তী আলোচনা সভার আয়োজন করছিলাম। সেখানে নেতাকর্মীরা বসেছিলেন। এ সময় নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অতর্কিত হামলা চালান। এ সময় তারা অফিসে থাকা চেয়ার-টেবিল, বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও গোলাম দস্তগীর গাজীর টানানো ছবি ভাঙচুর করেন।’
 
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপঙ্কর চন্দ্র সাহা বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

আরও পড়ুন

×