রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের পাশে থাকবে অস্ট্রেলিয়া 

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শন করেছেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং। বুধবার সেখানে যান তিনি।

পরিদর্শনকালে তাঁর কাছে আশ্রয়শিবিরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, খাবার পানির সংকট, নারী-শিশুদের দুর্ভোগ, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাত-লড়াই এবং প্রত্যাবাসনের বিষয় তুলে ধরেন রোহিঙ্গা নারীরা। পেনি ওং তাদের বলেন, টেকসই ও নিরাপদ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের পাশে থাকবে। বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মানবিক সেবা কার্যক্রমে অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতাও অব্যাহত রাখা হবে।

অস্ট্রেলিয়ার ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পেনি ওং। আজ সকাল সোয়া ৯টায় ঢাকা থেকে বিমানে কক্সবাজার পৌঁছান তিনি। এরপর সড়কপথে ৩৫ কিলোমিটার দূরে উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে যান। দুপুর ২টা পর্যন্ত প্রায় চার ঘণ্টা আশ্রয়শিবিরে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে অবস্থান করেন পেনি ওং। এ সময় তিনি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার সেবা কার্যক্রম পরিদর্শনের পাশাপাশি রোহিঙ্গা নারীদের সঙ্গে কথা বলেন।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার মানবিক সহায়তা কীভাবে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে কাজে লাগানো হচ্ছে, তা দেখতেই পেনি ওং এখানে আসেন। উখিয়ার কয়েকটি আশ্রয়শিবির ঘুরে দেখেছেন তিনি।

আরআরআরসির সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল ১০টায় উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে পৌঁছান অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি প্রথমে বালুখালী আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৮ ডব্লিউ) একটি উঁচু জায়গায় নির্মিত পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে উঠে পুরো শিবির দেখেন।

এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার এ এস এম ওবায়দুল্লাহ। তিনি আশ্রয়শিবিরে সরকারি ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ রোহিঙ্গা পরিস্থিতি তুলে ধরেন।

এরপর ওই শিবিরে জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর কর্তৃক পরিচালিত কয়েকটি সেবা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন পেনি ওং। শেষে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী যান পাশের বালুখালী আশ্রয়শিবিরে। এর পাশাপাশি তিনি জাতিসংঘের আইওএম পরিচালিত রোহিঙ্গা কালচারাল মেমোরি সেন্টার, হাতিরডেবা আশ্রয়শিবিরের হেলথপোস্ট, হাকিমপাড়া আশ্রয়শিবিরের ইউনিসেফ-ব্র্যাক পরিচালিত লার্নিং সেন্টার পরিদর্শন করেন।

কালচারাল সেন্টারে কয়েক রোহিঙ্গা শিল্পী পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওংকে তাদের আঞ্চলিক ভাষার গান শোনান। গান শুনে মুগ্ধ হন তিনি। এ সময় তিনি রোহিঙ্গা নারীদের তৈরি হস্ত ও কুটিরশিল্প দেখেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ঢাকায় ফিরে যান পেনি ওং।