ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

অগ্নিদগ্ধের ৮দিন পর গৃহবধূর মৃত্যু

অগ্নিদগ্ধের ৮দিন পর গৃহবধূর মৃত্যু

অভিযুক্ত স্বামী গোলাম রাব্বানী। ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ সংবাদদাতা

প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৭:২৭

নওগাঁয় যৌতুকের জন্য স্বামীর দেওয়া কেরোসিনের আগুনে দগ্ধ হয়ে ফজিলাতুন নেছা (২৪) নামে এক গৃহবধূ টানা ৮ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে মারা গেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে তিনি মারা যান। গত ২৭ আগস্ট সকালে সদর উপজেলার ভবানীপুর মধ্যপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

ফজিলাতুন নেছা সদর উপজেলার কোমইগাড়ী সাকিদার পাড়ার ফজলুর হোসেনের মেয়ে এবং একই উপজেলার ভবানীপুর মধ্যপাড়া গ্রামের আতোয়ার রহমানের ছেলে গোলাম রাব্বানীর স্ত্রী। ফজিলাতুন নেছার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার বাবা ফজলুর হোসেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, পারিবারিকভাবে চার বছর আগে সদর উপজেলার ভবানীপুর মধ্যপাড়া গ্রামের আতোয়ার রহমানের ছেলে গোলাম রাব্বানীর সাথে বিয়ে হয় ফজিলাতুন নেছার। বিয়ের কিছুদিন পরই পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে গোলাম রাব্বানী। বিষয়টি তার স্ত্রী জানতে পেরে নিষেধ করলে পরকীয়া করবেন না বলে যৌতুক বাবদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। এরপর থেকেই স্ত্রী ফজিলাতুন নেছাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন তার স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা।

এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার ২৭ আগস্ট সকালে আবারো তাকে যৌতুকের টাকা নিয়ে আসতে বলা হয়। এ সময় টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে লাঠি দিয়ে শরীরে বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করেন স্বামী গোলাম রাব্বানী। একপর্যায়ে সে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার পরিবারের সদস্যদের যোগসাজশে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন স্বামী গোলাম রাব্বানী। পরে তার চিৎকারে স্থানীয়রা এসে তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে প্রথমে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার আটদিন পর আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।

এদিকে এ ঘটনায় গৃহবধূর বাবা ফজলুর হোসেন বাদী হয়ে গোলাম রাব্বানীসহ তাঁর পরিবারের ৪ সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করলে স্বামী গোলাম রাব্বানীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল হক বলেন, ওই গৃহবধূ মারা যাওয়ার বিষয়টি আমরা শুনেছি। এ ঘটনায় থানায় পূর্বেই একটি মামলা হওয়ার পর তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। যেহেতু ওই গৃহবধূ মারা গেছেন এজন্য থানায় দায়ের করা মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়ে যাবে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

×