কুড়িগ্রামে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, লোকালয়ে ঢুকছে পানি

তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চর ও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ছবি: সমকাল
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৫:৫১ | আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৬:০৭
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নিম্নাঞ্চল ছাড়িয়ে পানি এখন লোকালয়ে প্রবেশ করছে।
তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চর ও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ফলে নিচু এলাকার ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সবজি ক্ষেত, ধান ক্ষেত তলিয়ে গেছে। হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় নদী ভাঙন ও ফসল নিয়ে আতঙ্কে আছেন নদী পাড়ের মানুষ।
আজ দুপুর ১২টার দিকে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, গত ৬ ঘণ্টায় ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নুন খাওয়া পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার, দুধকুমার পাটেশ্বরী পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সৃষ্ট বন্যায় তিস্তা তীরবর্তী রাজারহাট, উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার ৬ ইউনিয়নের চর ও নিম্নাঞ্চলের শতাধিক বসতভিটা এবং গ্রামীণ কাঁচা সড়ক নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। এতে শুধু রাজারহাট উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৬০০ পরিবার। এছাড়া ৩ শতাধিক হেক্টর জমির রোপা আমন ও মৌসুমি ফসলের ক্ষেতে পানির নিচে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম কৃষি বিভাগ।
রাজারহাটের তিস্তাপাড়ের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘গতকাল থেকে তিস্তার পানি উঠি আমার বসতভিটা তলে গেইছে। ছেলে-মেয়েকে নিয়ে খুব কষ্টে আছি।’
পাশের খিতাব খা গ্রামের আরেক কৃষক আলম বাদশা বলেন, ‘আমার ৫ শতক জমির বাদাম ক্ষেত তিস্তার পানিতে তলে গেইছে। দেখেন, পানি হু হু করে বাড়তেছে, পানির স্রোত খুব।’
রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাদিজা বেগম বলেন, ‘আমার উপজেলায় প্রায় ৬শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গতকাল কিছু পরিবারকে শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। মেডিকেল টিম কাজ করছে।’
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন সমকালকে বলেন, ‘হঠাৎ করেই তো তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। আমাদের লোকজন কাজ করছে মাঠে কি পরিমাণ ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। পরে সব তথ্য জানা যাবে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, আজ সন্ধ্যার মধ্যে তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করবে। এছাড়াও অন্যান্য নদ নদীর পানিও কমবে। তবে বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা নেই।’