ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

সাবেক এমপি মমতাজসহ ৯০ জনের নামে হত্যা মামলা

সাবেক এমপি মমতাজসহ ৯০ জনের নামে হত্যা মামলা

ছবি-সংগৃহীত

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৪ | ১৯:২৯ | আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৪ | ২০:২৭

‎মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে প্রধান আসামি করে আওয়ামী লীগের ৫২ নেতাকর্মী ও ৩৮ পুলিশ সদস্যসহ অজ্ঞাত ৫০-৬০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা হয়েছে। ঘটনার একযুগ পর নিহত মাওলানা নাসির উদ্দিনের ভাই শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে বুধবার মানিকগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক পৌর মেয়র মীর মোহাম্মদ শাহজাহান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান খান হান্নান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বলধরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মাজেদ খান, সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান শহীদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সদ্য বিলুপ্ত হওয়ার সিংগাইর উপজেলা চেয়ারম্যান সায়েদুল ইসলাম, সদ্য বিলুপ্ত হওয়া পৌরসভার মেয়র আবু নাঈম মো. বাশার, পৌর সভার সাবেক প্যানেল মেয়র সমেজ উদ্দিন, সাবেক কাউন্সিলর আব্দুস সালাম খান, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রমেজ উদ্দিনসহ ৫২ জন নেতাকর্মী।

পুলিশ সদস্যদের মধ্যে আসামিরা করা হয়েছে- তৎকালীন মানিকগঞ্জের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কামরুল ইসলাম, তৎকালীন ডিবি পুলিশের ওসি মহিবুল আলম, মদন মোহন বণিক, মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, সিঙ্গাইর থানার এসআই আদিল মাহমুদ, মোজাম্মেল হোসেনসহ ৩৮ জন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন গণজাগরণ মঞ্চ থেকে মহানবী হযরত মুহাম্মদকে (সা.) কটূক্তির প্রতিবাদে ২৪ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাইর পৌরসভার গোবিন্ধল থেকে মুসল্লিরা একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে। ওইদিন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রিভলবার, চাইনিস পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে উপস্থিত হয়ে বাধা দেয়।

একপর্যায়ে সাধারণ মুসুল্লিদের লক্ষ্য করে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গুলিবর্ষণ করে। এতে ঘটনাস্থলে গোবিন্ধল গ্রামের মাওলানা নাসির উদ্দিন, আলমগীর হোসেন, নাজিম উদ্দীন ও শাহ আলম নিহত হয়। এতে আহত হয় আরও অর্ধশতাধিক মুসল্লি।

এ ঘটনায় নিহতের স্বজনদের পক্ষ থেকে মামলা করতে চাইলে তৎকালীন পুলিশ মামলা নেয়নি। উল্টো পুলিশ বাদী হয়ে গ্রামবাসী ও স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা করে।

মামলার বাদী  শহিদুল ইসলাম জানান, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গোবিন্ধল এলাকায় নির্বিচারে গুলি করে তার ভাইসহ চারজনকে হত্যা করেছে। ওই সময় ন্যায়বিচার পায়নি তারা। তাই শেখ হাসিনার পতনের পর ন্যায়বিচারের আশায় তিনি দীর্ঘদিন পর মামলা করেছেন।

সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান জানান, গোবিন্ধল এলাকার মানুষজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ করেন। এতে প্রায় ৩৭ জন পুলিশ সদস্যকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। জীবন বাঁচাতে পুলিশ গুলি করে। এতে নিহতের ঘটনা ঘটে। এছাড়া কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম ওই সময় সংরক্ষিত আসনের এমপি ছিলেন কক্সবাজার জেলায় দায়িত্বে। মানিকগঞ্জ-২ আসনের তৎকালীন এমপি ছিলেন জাতীয় পার্টির আব্দুল মান্নান ও সংরক্ষিত আসনে রৌশনা আরা মান্নান। ওই ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী জড়িত ছিল না। শুধু রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার লক্ষ্যে একযুগ পর মামলাটি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

×