সাতক্ষীরায় ছেলেকে খুন করে লাশ পুঁতে রেখেছিলেন দম্পতি!

গ্রেপ্তার বাবা-মা (বাঁয়ে) ও নিহত ছেলে আরিফ বিল্লাহ- সমকাল
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ০৯:০৭
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে মোবাইল কেনার টাকা চাওয়ায় শ্বাসরোধ করে ছেলেকে হত্যা করেছে এক বাবা ও সৎ মা। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে তারা।
হত্যার পর লাশ মাটিতে পুঁতে ফেলার দুই মাস ২০ দিন পর স্থানীয়রা নিহতের বাবা ও সৎ মাকে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। উপজেলার চম্পাফুল গ্রাম থেকে শুক্রবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
বাবা-মাকে গ্রেপ্তারের পর শনিবার বিকেলে পুলিশ লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। নিহতের নাম আরিফ বিল্লাহ (১৭)। সে কালিগঞ্জ উপজেলার চম্পাফুল গ্রামের ইমান আলী মোড়লের ছেলে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- আরিফের বাবা ইমান আলী মোড়ল(৫৫) ও তার সৎ মা (ইমান আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী) জোহরা বেগম (৪২)।
কালিগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) আজিজুর রহমান জানান, চম্পাফুল গ্রামের ইমান আলী মোড়ল পাঁচ বছর আগে ছেলে আরিফ বিল্লাকে তার কাছে রেখে প্রথম স্ত্রী খালেদাকে তালাক দেন। পরে খালেদা অন্যত্র বিয়ে করেন। এরপর ইমান আলী জোহরা বেগমকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
তিনি জানান, বিয়ের পর থেকে জোহরা আরিফ বিল্লাহর সাথে খারাপ ব্যবহার করতেন। এক পর্যায়ে আরিফ বিল্লাহ মোবাইল কেনার টাকা চাওয়ায় চলতি বছরের ২৫ জুন রাত সাড়ে ১১টার দিকে জোহরা ও ইমান আলী তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর তারা আরিফ বিল্লাহ নিখোঁজ হয়ে গেছে বলে প্রচার করে। পরে তারা কাইকে কিছু না জানিয়ে গোপনে নিজেদের জমিতে তার তার লাশ পুঁতে রাখে।
ওসি জানান, এদিকে, ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে গত পহেলা সেপ্টেম্বর ছেলে পাগল হয়ে নিখোঁজ হয়ে গেছে জানিয়ে ইমান আলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তবে শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে ইমান আলী তার ছেলে আরিফকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে নিজের জমিতে পুঁতে রেখেছেন জানিয়ে এক ব্যক্তির কাছে স্বীকার করেন। বিষয়টি কয়েকজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ায় রাতে স্থানীয়রা ইমান আলী ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী জোহরাকে আটক করে পুলিশ সোপর্দ করেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ইমান আলী ও জোহরা তাদের ছেলে আরিফকে হত্যার কথা স্বীকার করে লাশ কোথায় পুঁতে রাখা হয়েছে মর্মে পুলিশকে জানান।
খবর পেয়ে আরিফের মা খালেদা বেগম রাতেই ইমান আলী ও জোহরার নাম উল্লেখ করে শুক্রবার রাতে একটি হত্যা মামলা করেন। ইমান আলী ও জোহরার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শনিবার বিকেলে আরিফের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তেরর জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এদিকে, শনিবার গ্রেপ্তার ইমান আলী ও জোহরা সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রেজোয়ানুজ্জামানের কাছে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
- বিষয় :
- সাতক্ষীরা
- ছেলেকে হত্যা