উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগে আইন হচ্ছে: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ফাইল ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ | ১২:২৮ | আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ | ১২:২৮
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলছেন, উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে আইন করার কাজ চলছে। কিছু দিনের মধ্যে এই আইন জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা যাবে বলেও জানান তিনি।
আজ সোমবার সংসদের বৈঠকে 'বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) বিল' পাসের আলোচনায় বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন।
এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। এরপর বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টি ও গণফোরামের সংসদ সদস্যরা বিচারক নিয়োগে আইন করার দাবি জানান।
বিলের আলোচনায় গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, সংবিধান অনুযায়ী এখন উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে অযোগ্যতার কথা বলা থাকলেও যোগ্যতার মানদণ্ড বলা নেই। এক্ষেত্রে বিচারক নিয়োগে সুনির্দিষ্ট আইন করা হলে নিয়োগ প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ থাকবে না। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আইন হয়েছে। একইভাবে বিচারক নিয়োগে আইন করা দরকার।জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, নির্বচান কমিশনার নিয়োগে কোনো আইন ছিল না। গত বছর এই আইন হয়েছে এবং আইনের ভিত্তিতে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। একইভাবে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগেও আইন করার কথা ছিল। কিন্তু তা এখনো হয়নি। অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ হয়।
এ বিষয়ে তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামও একই দাবি জানান।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিরোধী সদস্যদের আশ্বস্ত করে বলেন, বিচারক নিয়োগের ব্যাপারে আইন করার জন্য সরকার কাজ করছে। কিছু দিনের মধ্যেই এই আইন সংসদে আনতে পারবেন।
বিল পাস: আলোচনা শেষে 'বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) বিল-২০২৩' সংসদে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর দেওয়া সংশোধনী, জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবগুলো নিস্পত্তি করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। ১৯৮২ সালে সামরিক আমলে অধ্যাদেশ দিয়ে এ সংক্রান্ত আইন করা হয়। সেটি বাতিল করে বাংলায় নতুন এই আইনটি করা হচ্ছে।
বিলে বলা হয়েছে, অবসরের পর প্রধান বিচারপতি তার জীবদ্দশায় গৃহসহায়ক, গাড়িচালক, দারোয়ান সেবা, সাচিবিক সহায়তা এবং অফিস কাম বাসভবনের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রতি মাসে ৭০ হাজার টাকা বিশেষ ভাতা পাবেন।
বিলে আরও বলা হয়েছে, একজন বিচারককে তার মোট কর্মকালীন ছুটির শর্ত অনুযায়ী অর্ধ গড় বেতনে মোট ৩৬ মাসের অধিক ছুটি মঞ্জুর করা যাবে না। কোনো বিচারকের প্রকৃত কর্মকালের এক-চব্বিশাংশ ভাগ মেয়াদ পর্যন্ত তাকে পূর্ণ গড় বেতনে ছুটি মঞ্জুর করা যাবে। পূর্ণ গড় বেতনে ছুটি এককালীন পাঁচ মাস এবং অন্য কোনো ছুটি এককালীন ১৬ মাসের অধিক মঞ্জুর করা যাবে না।
কোনো বিচারক পূর্ণ গড় বেতনে ছুটিতে থাকাকালে তার নির্ধারিত মাসিক বেতনের সমান হারে ছুটিকালীন বেতন প্রাপ্য হবেন। এছাড়া কোনো বিচারক অনভিপ্রেত কোনো আঘাত দ্বারা বা কারণে অথবা স্বীয় দায়িত্ব পালনকালে আহত হয়ে কর্মে অক্ষম হলে বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি প্রাপ্য হবেন।
বিলে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি বিচারকদের পেনশন ও আনুতোষিক মঞ্জুরকারী কর্তৃপক্ষ হবেন। অবসরে যাওয়া বিচারকেরা উৎসব ও বাংলা নববর্ষ ভাতা পাবেন।
আইনের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতি অর্থ বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি। বিচারক অর্থ বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক এবং প্রধান বিচারপতি ও অতিরিক্ত বিচারকগণও অন্তর্ভুক্ত হবেন।
- বিষয় :
- আইনমন্ত্রী
- আনিসুল হক
- বিচারক নিয়োগ
- আইন পাস
- উচ্চ আদালত