আমেরিকা থেকে আসা খেলনার প্যাকেটে মিলল গাঁজার চকলেট-কেক
৩ তরুণ গ্রেপ্তার

ছবি: সংগৃহীত
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১৪:৫৩ | আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১৫:১২
শিশুদের খেলনার প্যাকেটে ভরে বিদেশ থেকে আনা হয়েছে টেট্রাহাইড্রো ক্যানাবিনল যুক্ত মাদক গাঁজার কুশ, চকলেট ও কেক। এসবের বাজার মূল্য প্রায় কোটি টাকা। সম্প্রতি আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া থেকে আসা একটি পার্সেল খুলে এসব পান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) ঢাকা মহানগর উত্তরের কর্মকর্তারা। পরে মাদকের এই চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত তিন তরুণকে আশুলিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- রাসেল মিয়া, রমজান মিয়া ও ইমরান ওরফে রাজ।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী জানান, পার্সেলের ভেতরে ছিল ৬টি প্যাকেট। যার মধ্যে ছিলো টেট্রাহাইড্রো ক্যানাবিনলযুক্ত কুশ, যা আমেরিকার তৈরি। যার ওজন ১ কেজি ৩০০ গ্রাম। পার্সেলে আরও ছিল আমেরিকার তৈরি গাঁজার চকলেট ৯টি। এছাড়া পার্সেলে ছিল আমেরিকার তৈরি ১০টি গাঁজার কেক।
তিনি বলেন, গত ২১ এপ্রিল পল্টনের পুরোনো ডাক ভবনের বৈদেশিক ডাকের সিইডি/ডিসিএল শাখায় ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য থেকে আসা একটি পার্সেল জব্দ করা হয়। এর আগে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডিএনসি জানতে পারে ওই পার্সেলে বিপুল পরিমাণ মাদক রয়েছে। পার্সেলের গায়ে পাওয়া তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে প্রযুক্তির সহায়তায় প্রাপকের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে আশুলিয়ার কাঠগড়া বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাসেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাসেল জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, পার্সেলটি ডেলিভারি নেওয়ার কথা ছিল তার। সে আরও জানায়, গ্রেপ্তার রমজান মিয়া তাকে পার্সেলটি টাকার বিনিময়ে রিসিভ করার কথা বলে। পরে রাসালের দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে রমজান মিয়াকে আশুলিয়ার আমতলা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। রমজান মিয়া জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তাকে টাকার বিনিময়ে পার্সেলটি রিসিভ করতে বলেন মো. ইমরান ওরফে রাজ। পরে আশুলিয়ার আমতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাজকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রমজান ও রাজ বন্ধু।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, যে প্যাকেটে মাদকগুলো আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে এসেছিল সেগুলো ছিল বাচ্চাদের খেলনার প্যাকেট। যাতে করে কেউ বুঝতে না পারে এসব প্যাকেটে মাদক রয়েছে। গ্রেপ্তাররা দীর্ঘদিন ধরে এভাবে বিদেশ থেকে গাঁজার কেক, কুশ ও চকলেট এনে রাজধানীরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করতো। বিদেশ থেকে যারা এই মাদকটি বাংলাদেশে পাঠিয়েছেন তাদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এই মাদক অবৈধ, তাই এখানে এই মাদক পাঠানো আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। বাংলাদেশে এটা অবৈধ জেনেই তারা বাচ্চাদের খেলনার প্যাকেটে পাঠিয়েছে। এই পার্সেলটি যে কোনো আমেরিকান নাগরিকই পাঠিয়েছেন বিষয়টি এমন নয়। সেখানে বসবাসরত অন্য কোনো দেশের নাগরিকও পাঠাতে পারেন। গ্রেপ্তারদের মধ্যে একজন একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির মার্কেটিং অফিসার। আমরা তদন্তে জানার চেষ্টা করব তাদের অর্থের উৎস কী এবং তারা কীভাবে অর্থ সেখানে পাঠিয়েছেন।
আমেরিকা থেকে এই মাদক বাংলাদেশে কতবার এসেছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমরা তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জেনেছি, তারা গত দুই বছর ধরে এই মাদক বাংলাদেশে নিয়ে আসছে।