প্রসূতির মৃত্যু

নীলফামারীর ডোমারে ভুল অস্ত্রোপচারে বেবী আক্তার নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। তবে নবজাতকটি সুস্থ আছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

গর্ভধারণ নারীজীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আজও বাংলাদেশে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে অনেক নারী ও তাদের পরিবার বিভিন্ন প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়। তাদের কাছে জন্মদান যেন এক দুঃস্বপ্ন– যন্ত্রণা, ঝুঁকি, এমনকি মৃত্যুর। এমন হওয়ার কথা ছিল না। নবজাতকরা দেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধার। তাদের আগমন নিরাপদ হোক। এ নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এখনই। লিখেছেন শাহেরীন আরাফাত

কুমিল্লায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে এক প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার রাতে চান্দিনা উপজেলার নোয়াবপুর টাওয়ার হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি তদন্তে বুধবার বিকেলে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

চার দিনের ব্যবধানে কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভার তেবাড়িয়া এলাকার নোভা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে দুই প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা তাসলিমা হোসেন ১৯ বছর বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। বছর না ঘুরতেই অন্তঃসত্ত্বা হন। সম্প্রতি জটিলতা দেখা দিলে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখান থেকে পাঠানো হয় রাজধানীতে। বেসরকারি একটি হাসপাতালে নবজাতককে পৃথিবীর আলো দেখাতে পারলেও তাসলিমা নিজে না ফেরার দেশে চলে যান। স্বজনরা জানান, তাসলিমা গর্ভকালে কোনো চিকিৎসকের কাছে যাননি। ফলে সন্তান ধারণের পর থেকে তাঁর শারীরিক জটিলতার বিষয়ে কেউ জানত না। শেষ মুহূর্তে যখন জানা গেছে, চিকিৎসকরা শত চেষ্টা করেও মাকে বাঁচাতে পারেননি।

পাবনায় বেসরকারি আইডিয়াল হাসপাতালে রোববার রাতে কয়েক ঘণ্টা ব্যবধানে দুই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। পৃথক চিকিৎসকের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে (সিজার) সন্তান প্রসবের কয়েক ঘণ্টা পর তাদের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। তবে দু’জনের সন্তানই সুস্থ রয়েছে।

রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারে শিশু জন্মের সময় দুই মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় চলছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, অস্ত্রোপচারের সময় তাদের যে স্যালাইন দেওয়া হয়েছিল, তাতে সমস্যা থাকায় কিডনি বিকলসহ শারীরিক নানা জটিলতা দেখা দেয়। পরে তাদের মৃত্যু হয়। এরই মধ্যে পরীক্ষার জন্য এসব স্যালাইনের নমুনা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

‘হাসপাতালে সার্জন ছিল না। নেই গাইনি বিশেষজ্ঞও। অন্তঃসত্ত্বা ইয়াসমিন আক্তারকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান এক নার্স। তড়িঘড়ি করে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বের করা হয় সন্তান। কিন্তু সদ্যপ্রসূত ফুটফুটে ছেলের মুখ দেখার সৌভাগ্য হয়নি হতভাগী ইয়াসমিনের। ওটিতে গলগল করে রক্ত ঝরতে থাকে তাঁর শরীর থেকে।

কিশোরগঞ্জ শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে অস্ত্রোপচারে সন্তান জন্ম দেওয়ার পর এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ করেছেন তাঁর স্বজন। পরে ৯ লাখ টাকায় বিষয়টির মীমাংসা হয়। মেহজাবিন নামের ওই প্রসূতি একটি কন্যাসন্তান রেখে গেছেন

বৃষ্টি আক্তার, দ্বিতীয় সন্তান ভূমিষ্ঠের প্রহর গুনছেন। নিয়মিত চিকিৎসক দেখিয়েছেন। স্বাভাবিক প্রসবের আশায় শেষ সময়ে ভর্তি হলেন রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে। দায়িত্বরত চিকিৎসক প্রসূতির কাছে গিয়ে বললেন, আপনার মুখ খুব শুকনো লাগছে।