ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে নারীকে পতিতালয়ে বিক্রি, ২ জনের যাবজ্জীবন

মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে নারীকে পতিতালয়ে বিক্রি, ২ জনের যাবজ্জীবন

ফরিদপুর অফিস

প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৩ | ১৭:৪৭ | আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০২৩ | ১৮:০০

ফরিদপুরে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে দোষী সাব্যস্ত করে নারীসহ দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে ফরিদপুরের মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ আদেশ দেন।

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার গোপালপুর গ্রামের শমসের খাঁ (৪৪) ও সদরপুর উপজেলার চর বিষ্ণপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ আলম নগর গ্রামের বাসিন্দা কুটি বেগম ওরফে কাজল খান ওরফে আনোয়ারা (৪৭)। তারা দু'জনেই পলাতক।

২০১১ সালের ২ জুন নগরকান্দা থানায় মামলাটি দায়ের করেন সদপুরের চরবিষ্ণপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ আলম নগর গ্রামের এক বাসিন্দা।

মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, তার স্ত্রীকে (২৩) মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে শমসের খাঁ ৬০ হাজার টাকা নেন। শমসের খাঁর বড় ভাই মোকলেস খাঁ মালয়েশিয়ায় কাজ করেন। তার মাধ্যমে আশপাশের বিভিন্ন এলাকার অনেক নারী-পুরুষ বিদেশে গিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন- এই প্রলভন দেখান। এরপর ভিসা হয়েছে বলে ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি বাদীর স্ত্রীকে ঢাকায় নিয়ে যান। ৩০ মে মামলার বাদী জানতে পারেন তার স্ত্রীকে ভারতের বেঙ্গালুরুর একটি পতিতালয়ে পাচার করে দেওয়া হয়েছে। পরে তিনি জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সহায়তায় নগরকান্দা থানায় মামলা করেন।

মামলাটির তদন্ত করেন নগরকান্দা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) খালিদ আহমেদ। তিনি ২০১১ সালের ১৩ অক্টোবর শমসের খাঁ ও কুটি বেগমকে ২০০২ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির মানব পাচার প্রতিরোধ সেলের দায়িত্বরত কর্মকর্তা দীপ্তি বল জানান, ২০১২ সালে দেশে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন করা হয়। এই মামলা ২০১৬ সালে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

দীপ্তি বল আরও জানান, ভারতের বেঙ্গালুরুর একটি পতিতালয় থেকে মামলার বাদীর স্ত্রীসহ ২০ তরুণীকে ২০১১ সালে উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের কলকাতায় লিলো হোম নামে একটি সরকারি সেফ হোমে রাখা হয়। আইনগত প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।

শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মামলাটি পরিচালনা করেন জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির ফরিদপুরের সদস্য আইনজীবী শামসুন্নাহার নাইম।

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে ফরিদপুরের মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি স্বপন পাল জানান, এ রায় দেশে মানব পাচার প্রতিরোধে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। তিনি জানান, আসামিরা যেদিন গ্রেপ্তার হবে সেই দিন থেকে তাদের সাজা শুরু হবে।

আরও পড়ুন

×