রাজারহাটে বেহাল স্বাস্থ্যসেবা
চিকিৎসক সংকটে সেবা দেন ফার্মাসিস্ট স্যাকমো

ফাইল ছবি
রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২০:৫৭
তিন লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্সরে ও আলট্রাসনোগ্রাফি কার্যক্রম চালু নেই। চিকিৎসকের অভাবে বন্ধ একটি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। অপর ৩টি চলছে ফার্মাসিস্ট ও স্যাকমো দিয়ে। চিকিৎসক ও সরঞ্জামের অভাবে এবং অপ্রতুল ওষুধসহ নানা সমস্যায় ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা।
৫০ শয্যা উপজেলা হাসপাতালে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, আবাসিক মেডিকেল অফিসার, জুনিয়র কনসালট্যান্ট অবেদনবিদ, সার্জারি ও গাইনিসহ ২১ জন চিকিৎসক থাকার কথা। কাগজেকলমে ১০ জন থাকলেও কুড়িগ্রাম ও নাগেশ্বরীতে ডেপুটেশনে রয়েছেন ২ জন। বাকি ৮ জনের মধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, ৪ জন মেডিকেল অফিসার ও ৩ জন জুনিয়র কনসালট্যান্ট রয়েছেন। প্রতিদিন একজন করে চিকিৎসকের সাপ্তাহিক ছুটি থাকে। কখনও বিশেষ প্রয়োজনে কেউ ছুটিতে গেলে আরও টানাপোড়েন শুরু হয়। এ ছাড়া একমাত্র আবাসিক মেডিকেল অফিসারের পদটিও শূন্য। শূন্য রয়েছে ডেন্টাল সার্জন, স্টাফ নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ডেন্টাল, ইপিআই টেকনিশিয়ান, সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট, কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারসহ ৪৭টি পদ। ফলে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা।
২০০৫ সালে এ হাসপাতালে এক্সরে কার্যক্রম শুরু হয়। অল্প দিনের মধ্যেই ত্রুটি দেখা দেয় যন্ত্রটিতে। এরপর থেকে প্রতি বছরই কখনও চালু কখনও বন্ধ থাকে যন্ত্রটি। চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে একেবারেই বিকল হয়ে যায়। অপারেটরের অভাবে আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন থাকা সত্ত্বেও চালু করা যাচ্ছে না। ৩টি ইসিজি মেশিন থাকলেও রোগীদের বাইরে থেকে এ পরীক্ষাটি করতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। তা ছাড়াও রয়েছে ওষুধের অপ্রতুলতা।
এদিকে চিকিৎক না থাকায় ২ বছর ধরে উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রতিগ্রাম উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। উমর মজিদ ও পাঙ্গা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাসেবা চলছে ফার্মাসিস্ট দিয়ে। একজন স্যাকমো (উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার) পরিচালনা করছেন নাজিমখান ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র। এসব সমস্যার কারণে সেবাবঞ্চিত উপজেলাবাসী। বিশেষ করে উন্নত চিকিৎসাসেবা গ্রহণে যাদের সামর্থ্য নেই তারা চরম বিপাকে পড়েছেন।
বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা নাজমা বেগম, এনামুল হকসহ অনেকে বলেন, চিকিৎসক সংকটের কারণে আমাদের দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
মাসুদ রানা নামে একজন যুবক বলেন, এ হাসাপাতালে চিকিৎসক সংকট প্রকট। এক চিকিৎসক সব রোগের ব্যবস্থাপত্র দেন। রোগ নির্ণয় যন্ত্রগুলোও বিকল। ফলে সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত আমরা।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, জনবল সংকটের বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।