কুষ্টিয়া
হাত-পা বেঁধে চারতলা থেকে ফেলে কলেজছাত্রকে হত্যা

রুবেল হোসেন। ছবি- সংগৃহীত
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৪ | ১৪:৫৪
কুষ্টিয়া শহরের একটি চারতলা বাড়ির ছাদ থেকে ফেলে রুবেল হোসেন (২২) নামে এক কলেজছাত্রকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কোর্টপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবু রাসেল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহত কলেজছাত্রের নাম রুবেল হোসেন (২২)। তিনি কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে। রুবেল কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাওয়ার ডিপার্টমেন্টের ষষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্র। কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়া এলাকার একটি চারতলা ভবনের তৃতীয় তলায় ছাত্রাবাসে থাকতেন তিনি। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। হত্যার প্রকৃত কারণ নিয়েও রহস্য রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রশি দিয়ে হাত-পা ও কাপড় দিয়ে মুখ বাঁধা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পথে রাত সাড়ে ১২টার দিকে রুবেলের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত রুবেলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া মেসের সঙ্গী আনিসুর রহমান বলেন, তিন তলায় তিনটি রুমে আমরা ৯ জন থাকতাম। রুবেলের রুমে তিনজন থাকতো। রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে নিজ কক্ষ থেকে চিৎকারের শব্দ শুনে নিচে নেমে এসে দেখি হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় রুবেল পড়ে আছে। তখন স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে।
তিনি আরো বলেন, বিকেল থেকে রুবেলকে চিন্তিত থাকতে দেখেছি। সন্ধ্যার পরে এক সাথে ছাত্রাবাসের খরচের হিসাব করেছি। তবে এই ঘটনা কিভাবে, কারা ঘটিয়েছে তা জানি না।
কামরুল হাসান শুভ নামে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ধারণা করছি হাত-পা ও মুখ বেঁধে মারধর করে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে তাকে। তার দুই হাত, দুই পা সাদা রশি ও মুখ লাল কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল। ঘটনার পর পুলিশের সঙ্গে ভবনের তিনতলায় গেলে ওই রুমের বারান্দায় একই রঙের রশি টানানো থাকতে দেখেছি। তিনি দাবি করেন এটা একটা হত্যাকাণ্ড। কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে।
রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওই ছাত্রাবাসে গিয়ে দেখা যায়, রুবেলের সঙ্গে একই রুমে থাকা হৃদয় ও রাইসুলসহ অন্যান্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এ সময় বিষয়টি তদন্ত করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায় স্থানীয়রা।
মাহিম নামের স্থানীয় এক যুবক জানান, ঘটনার পরেই আমরা ছাত্রাবাসের ছেলেদের কাছে ঘটনা কি হয়েছে জিজ্ঞাসা করেছি। তারা কেউ কিছু জানে না বলছে। তবে চারতলা ভবনের ছাদ বন্ধ থাকে। বাড়ির মালিক ছাড়া ছাদের চাবি ছাত্রাবাসের এক ছেলের কাছে থাকে জানতে পেরেছি। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক কিছু জানতে পারবে।
কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাত ১১টার দিকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়েছে।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবু রাসেল বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আশা করছি দ্রুত রহস্য উম্মোচন হবে।
- বিষয় :
- কুষ্টিয়া
- কলেজছাত্র নিহত