সরকারি কর্মচারীদের ওপর আ.লীগ নেতাকর্মীদের হামলা, লাঞ্ছিত ইউএনও

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে গাড়ি রাখতে নিষেধ করায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আনসার সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে আহত হয়েছেন ছয়জন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) লাঞ্ছিত করে নেতাকর্মীরা। পরে ইউএনও কার্যালয়ে ইটপাটকেল ছুড়ে ভাঙচুর করা হয়। শনিবার দুপুরের এ ঘটনায় আহত এক আনসার সদস্য সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

আহতরা হলেন- ইউএনওর গাড়িচালক রুবেল হোসেন, আনসার সদস্য মো. আকরাম ও রেজোয়ান, বিআরডিবি (বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড) কার্যালয়ের কর্মচারী লিটন আহমেদ, উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের কর্মচারী রাসেল মিয়া ও মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের প্রোগ্রামার উজ্জ্বল কুমার শীল।

স্থানীয়রা জানান, শহীদ ময়েজউদ্দিনের ৩৯তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে কালীগঞ্জ আর আর এন পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে স্মরণসভার আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। দুপুরে বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীরা সেখানে জড়ো হতে থাকে। মোক্তারপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল নিয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরের ভেতরে জড়ো হয়। এ সময় চত্বরের শিল্পকলা একাডেমিতে জাতীয় কন্যাদিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠান চলছিল। প্রথমে উপজেলা পরিষদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা তাদের গাড়ি চত্বরের বাইরে রাখার অনুরোধ করেন। এতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন ইউএনও আজিজুর রহমান। তাদের শান্ত হওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। 

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, এ সময় ইউএনওর সঙ্গে চেয়ারম্যানের বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে আলমগীর হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন, যুবলীগ নেতা ফয়সাল ফকির, জাহাঙ্গীর, সিদ্দিকসহ ১০-১২ জন ইউএনওসহ তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজনের ওপর চড়াও হয়। এ সময় ইউএনকে লাঞ্ছিত করেন তারা। সরকারি কর্মচারী ও আনসার সদস্যরা ইউএনওকে রক্ষার চেষ্টা করলে তাদের ওপর হামলা চালায় নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে তারা ইউএনওর কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে ইটপাটকেল মারতে থাকেন। এতে কয়েকটি জানালার কাঁচ ভেঙে যায়। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মোক্তারপুর ইউনিয়ের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

কালীগঞ্জের ইউএনও আজিজুর রহমান সমকালকে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় রাতে সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন আনসার সদস্য আকরাম হোসেন। মামলার প্রধান আসামি আলমগীর হোসেন।

কালীগঞ্জ থানার ওসি ফায়েজুর রহমান জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।