ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

৫৭ বছর বয়সে পুলিশ কনস্টেবল আব্দুস সামাদের এসএসসি জয়

৫৭ বছর বয়সে পুলিশ কনস্টেবল আব্দুস সামাদের এসএসসি জয়

পুলিশ কনস্টেবল আব্দুস সামাদ- সমকাল

বগুড়া ব্যুরো

প্রকাশ: ১২ মে ২০২৪ | ২১:২০ | আপডেট: ১২ মে ২০২৪ | ২১:৪০

চাকরির বাকি আর মাত্র দুই বছর দশ মাস। ইতিমধ্যে পুলিশের পোষাকে কাটিয়ে দিয়েছেন জীবনের ৩৭টি বসন্ত। তবে চাকরির শেষ বয়সে জ্বলে উঠেছেন বগুড়ার ট্রাফিক বিভাগের কন্সটেবল আব্দুস সামাদ। ৫৭ বছর বয়সে তিনি কারিগরি শাখা থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.২৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

রোববার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে পুলিশ সদস্য আব্দুস সামাদের এ সাফল্যর খবরটি জানা যায়।

পুলিশ কনস্টেবল সামাদ রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার আশরাফপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বর্তমানে বগুড়া সদর ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত আছেন।

জানা যায়, তিনি দুই বছর আগে নাটোরের লালপুরের মোহরকয়া নতুনপাড়া মাধ্যমিক কারিগরি ও ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। সেখান থেকে এ বছর ২০২৪ সালের এসএসসি ও সমমনা পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতকার্য হয়েছেন।

পুলিশ কন্সটেবল সামাদ জানান, গত দুই মাস আগে বগুড়া পুলিশে যোগদান করেন। এর আগে পাবনার ঈশ্বরদীর ট্রাফিক বিভাগে ছিলেন। সেখানে থাকা অবস্থায় ঈশ্বরদী থেকে বিদ্যালয়টি কাছে হওয়ার সুবাদে নাটোরের লালপুরের একটি ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। এই প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পাস করেন। তবে পরীক্ষার রেজাল্ট পাওয়ার আগেই বগুড়ায় বদলী হয় তার।

তিনি জানান, ১৯৮৭ সালের ১০ অক্টোবর ৩৭ বছর আগে পুলিশ বিভাগে চাকরি পান। নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান সামাদের আরও দুই ভাই ও এক বোন আছেন। তাই পরিবারের হাল ধরতে সেই সময় অষ্টম শ্রেণি পাশ করেই তিনি পুলিশে যোগদান করেন। পরে কর্মস্থলের বাস্তবতায় আর এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ হয়নি। তবে চাকরির শেষ সময়ে এসে স্ত্রীর অনুপ্রেরণায় এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ফলাফলে বাজিমাত করেন সামাদ।

আব্দুস সামাদ বলেন, ইতিমধ্যে হোমিও প্যাথির চিকিৎসা শাস্ত্র তিনি পড়াশোনার মাধ্যমে আয়ত্ত করেছেন। তাই বগুড়া হোমিও কলেজে ডিপ্লোমাতে ভর্তি হয়ে অবসরের পর শেষ জীবনের শেষ সময়টুকু সাধারণ মানুষদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে কাটিয়ে দিতে চান।

আব্দুস সামাদের এসএসসি পাশের খবর জানার পর তার কর্মস্থল ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সুমন রঞ্জন সরকার তাকে ফুল দিয়ে সংবর্ধনা জানিয়ে মিষ্টি মুখ করান।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, ডিপার্টমেন্ট থেকে সদস্যদের মান উন্নয়নের ক্ষেত্রে সবসময় ইতিবাচক সহযোগিতা করা হয়। দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সামাদের ৫৭ বছর বয়সে এসে এসএসসি পাস সমাজের সবশ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য অনুপ্রেরণা। মানুষ চাইলে সব সাধন করতে পারেন সামাদ তারই প্রতিফলন দেখিয়েছেন।

পুলিশ কন্সটেবল আব্দুস সামাদের স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছেন।

আরও পড়ুন

×