নিয়োগ বাণিজ্য ও জমি বিক্রির অভিযোগ মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে

ম্যাপ
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৭:২৪ | আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৭:৩৪
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে খামার ঈদগাহ দ্বি-মুখী দাখিল মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, মাদ্রাসার জমি লিজ দিয়ে টাকা আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয়রা। পরে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মাদ্রাসার বর্তমান সভাপতি ও ইউএনও।
লিখিত অভিযোগে মাদ্রাসার সুপার মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নামে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়ে চাকরি না দেওয়া, রাজনৈতিক কারণে সহকারী শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগ করানোর কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া জমি লিজ দিয়ে টাকা আত্মসাৎ, মাদ্রাসার মসজিদে স্থানীয়দের নামাজ আদায়ে বাধাসহ নানা অভিযোগ আনা হয়েছে।
ভুক্তভোগী মাইনুল ইসলাম বলেন, চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাঁর কাছ থেকে ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা, চাকরি দেওয়ার পরেও বাদ দেওয়া হয়েছে রাজনৈতিক কারণে। মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাবেক এমপি মাজহারুল ইসলাম সুজনের নির্দেশে নিজের ইচ্ছেমতো মাদ্রাসা চালাতেন তিনি। এলাকার কেউ কথা বললে তাদের মামলার হুমকি দেওয়া হতো।
আতাউর রহমান নামে আরেক ভুক্তভোগীর অভিযোগ, চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নেন মাদ্রাসার সুপার মামুনুর রশীদ। পরে কিছু ফেরত দিলেও বাকি টাকা দেয়নি।
মাদ্রাসাটিতে ২৫ বছর ধরে চাকরি করেছেন সাবেক সহকারী শিক্ষক ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, ২০১১ সালে মাদ্রাসার কক্ষে আটক রেখে জোর করে পদত্যাগপত্র লিখে নেন সুপার ও তাঁর ভাই সহকারী শিক্ষক মানিক হোসেন। এ ঘটনার পর আদালতে মামলা করেন। এক পর্যায়ে মামলা তুলে নেওয়ার শর্তে চাকরি ফেরত দিতে চান সুপার। মামলা তুলে নেওয়ার পর সাড়ে ৬ লাখ টাকা দিয়েও ফেরত পাননি। পেনশনের টাকাও পাননি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দাতা সদস্যদের পরিবারও ১৭ বছরে কোনো হিসাব দেখতে পায়নি। মাদ্রাসার নামে সাড়ে ১৭ বিঘা আবাদি জমি আছে। আগে প্রতি বছর ডাক হলেও এখন কীভাবে অন্যের দখলে আছে, সেটা এলাকাবাসী জানে না। লিজ দিয়ে টাকা আত্মসাৎসহ ১৭ বছর আয়-ব্যয়ের হিসাব না থাকায় এ অবস্থা হয়েছে। একটি পদ খালি হলে কমপক্ষে তিনজন থেকে টাকা নিয়েছেন সুপার। খামার ওয়ার্ড কৃষক লীগের সভাপতি মামুনুর রশীদ আগে ভারপ্রাপ্ত সুপার ছিলেন।
অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগের আমলে সুপার হিসেবে নিয়োগ নিয়ে অবৈধভাবে পকেট কমিটি গঠন করে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। মসজিদে স্থানীয়দের নামাজ আদায় করতে দিতেন না। সাবেক এমপি মাজহারুল ইসলামের ছত্রছায়ায় নিজের ইচ্ছামতো ব্যবহার করতেন। সংবাদকর্মীরা তথ্যের জন্য গেলে বের করে দিতেন।
খামার ঈদগাহ দ্বি-মুখী দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. মামুনুর রশিদ মামুন নিয়মিত মাদ্রাসায় আসেন না বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউএনও এবং মাদ্রাসার সভাপতি মো. আরিফুজ্জামান বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের হিসাবও দেখা হবে। তাদের নিজস্ব জমি থাকলে তা সঠিকভাবে ব্যবহারের বিষয়টি দেখবেন বলেও জানান তিনি।
- বিষয় :
- নিয়োগ বাণিজ্য
- অনিয়মের অভিযোগ
- ঠাকুরগাঁও
- হরিপুর