নানার কুলখানিতে এসে বন্যার পানিতে প্রাণ গেল শিশুর

শেরপুর সদরের ধলা ইউনিয়ন থেকে মামার সঙ্গে নালিতাবাড়ী নানার বাড়িতে বেড়াতে এসে রাস্তায় খেলতে গিয়ে বন্যার পানিতে ডুবে প্রাণ হারিয়েছে জিমি আক্তার (৮) নামে এক কন্যাশিশু। এ সময় আহত হয়েছে ফাহিম (৯) নামে আরেক শিশু। 

সোমবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার ঘোনাপাড়া জামে মসজিদের সামনে রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। 
জিমি শেরপুর সদরের ধলা ইউনিয়নের চান্দেরনগর কড়ইতলা এলাকার জামান মিয়ার মেয়ে। গত বৃহস্পতিবার সে তার মামার সঙ্গে নালিতাবাড়ী উপজেলার ঘোনাপাড়া গ্রামে নানা নুরালী মিয়ার বাড়িতে নানার শ্যালকের কুলখানির দাওয়াতে আসে।

স্থানীয়রা জানান, কুলখানির দাওয়াতের জন্য জিমির এক মামা বৃহস্পতিবার তাকে বাবার বাড়ি থেকে নানার বাড়িতে নিয়ে আসে। এদিকে শুক্রবার রাত থেকে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বেশ কয়েকটি নদীর পাড় ভেঙে নালিতাবাড়ীতে ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি হয়। ঘোনাপাড়া গ্রামও বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। ফলে ওই কুলখানির অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়। বন্যা নেমে গেলে পরে অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরই জেরে জিমি সে পর্যন্ত নানার বাড়িতে অবস্থান করছিল।

আজ সোমবার সকাল ১১টার দিকে জিমি তার ছোট মামা ফাহিমের (৯) সঙ্গে নানার বাড়ির সামনে মসজিদের পাশে  রাস্তায় খেলছিল। রাস্তায় পানি থাকায় খেলার এক পর্যায়ে ফাহিম ও জিমি পা পিছলে নিচে পড়ে যায়। এসময় জিমি পানির গভীরে চলে গেলেও ফাহিমের শরীরের কিছু অংশ ভেসে উঠছিল। পরে দূর থেকে এক কিশোর বুঝতে পেরে ফাহিমকে উদ্ধার করে। এসময় ফাহিমের দেওয়া তথ্যে স্থানীয়রা পানিতে নেমে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী খোঁজাখুঁজি করে জিমিকে উদ্ধার করেন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় স্বজনরা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জিমিকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর থেকে শিশুটিকে এক নজর দেখার জন্য এলাকাবাসীরা বাড়িতে ভীর করছেন। 

গত শুক্রবার থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত জেলায় বন্যার পানিতে ডুবে নারী, বৃদ্ধ, কিশোর ও শিশুসহ মোট ৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছানোয়ার হোসেন বলেন, পানিতে ডুবে মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।