বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিন

আগামী মাসে দেশে বন্যার আশঙ্কা করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ব্যাপারে আগাম প্রস্তুতি নিতে সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের সম্মেলন কক্ষে বৈঠকে একনেক চেয়ারপারসন হিসেবে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী। 

বৈঠকে ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে পুরোনো প্রকল্পের সংশোধনী চারটি। বাকি সাতটি নতুন প্রকল্প। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৫ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। এ অর্থের মধ্যে বিদেশি ঋণ ১৪০ কোটি টাকা। ১০৫ কোটি টাকা বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর নিজস্ব। বাকি ৫ হাজার ২১৪ কোটি টাকা জোগান দিচ্ছে সরকার।

বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন নির্দেশনা এবং বৈঠকের বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম। প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য সিনিয়র সচিব সত্যজিৎ কর্মকারসহ সচিব পদমর্যাদার অন্য সদস্যরা ব্রিফিংয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। 

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন উৎস থেকে খবর পেয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে তিনি আশঙ্কা করছেন, আগামী মাসে দেশে বন্যা হতে পারে। এ জন্য সবাইকে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর অন্যান্য নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে সুচারুরূপে বাজেট বাস্তবায়ন। এ জন্য অর্থবছরের শুরুতেই প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। সাধারণত এ সময় বৃষ্টি ও বর্ষায় উন্নয়ন প্রকল্পের মূল কাজ বিঘ্নিত হয়। এ কারণে এ সময় দাপ্তরিক কাজ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হবে, যাতে বৃষ্টির মৌসুম শেষ হলে প্রকল্পের মূল কাজ শুরু করা যায়।

একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে আছে ঢাকা অঞ্চলে কৃষির উন্নয়ন। উৎপাদনশীলতা বাড়াতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। এ ছাড়া আছে ৩০০ কোটি টাকার বরগুনা জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর। মুন্সীগঞ্জ জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পও একই অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটিতে ব্যয় হবে ৭০০ কোটি টাকা। 
এ ছাড়া রয়েছে রায়পুর ১২০ মেগাওয়াট পিক গ্রিড টাইড সোলার পাওয়ার প্লান্টের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্প। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নেওয়া প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় ১০৫ কোটি টাকা। গতকাল অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে ব্যয়ের দিক থেকে সবচেয়ে বড় প্রকল্প হচ্ছে থানার প্রশাসনিক কাম ব্যারাক ভবন নির্মাণ। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা। ২০২৭ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা। 

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা বৈঠকে অংশ নেন।