মেয়র-কাউন্সিলরদের দুর্নীতির শ্বেতপত্র বের হওয়া উচিত: চসিক মেয়র

নগরীর চকবাজার ওয়ার্ডে মশক নিধন ক্র্যাশ প্রোগ্রাম ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান কার্যক্রম শুরু করেন ডা. শাহাদাত হোসেন। ছবি: সমকাল
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪ | ১৯:০৯
নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে দুর্নীতির চিত্র দেখতে পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর আর মেয়র মিলে যে দুর্নীতি করেছে, তার শ্বেতপত্র বের হওয়া উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর চকবাজার ওয়ার্ডে মশক নিধন ক্র্যাশ প্রোগ্রাম ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান কার্যক্রম শুরু করতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় চকবাজার ওয়ার্ডে কর্মরত পরিচ্ছন্নকর্মীরা আছেন কিনা তার হাজিরা নিয়েছেন মেয়র। পাশপাশি তারা নিয়মিত কাজ করেন কিনা তা স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে চান। পরে ডেঙ্গু সচেতনতা বিষয়ে নগরবাসীর মধ্যে লিফলেট বিতরণ করে মেয়র।
সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমি প্রতিটি ওয়ার্ডে যাচ্ছি। প্রতিটা ওয়ার্ডে যাওয়ার পরে সুনির্দিষ্ট কিছু দুর্নীতির চিত্র আমি দেখতে পাচ্ছি। বিশেষ করে আপনারা দেখেছেন, আমি যখন শোলকবহর ওয়ার্ডের বিপ্লব উদ্যানে গিয়ে দেখলাম ২৫টা দোকান থেকে অলরেডি ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা লোপাট হয়ে গেছে। সেখানে সিটি করপোরেশন পুরো এক বছরে পেত মাত্র এক লাখ টাকা। অথচ সেখানে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা প্রতিবছর আয় করার কথা ছিল। কাজেই এই যে একটা দুর্নীতি মেয়র এবং কাউন্সিলররা মিলে করেছে; এটার শ্বেতপত্র বের হওয়া উচিত। জনগণের সেটা জানা উচিত। জনগণই বিচার করবে দুর্নীতির জন্য তাদের কি শাস্তি পাওয়া উচিত।’
চসিক মেয়র বলেন, ‘গত সরকারের আমলে প্রতিটি ওয়ার্ডে ৬০ থেকে ৯০ জন পর্যন্ত পরিচ্ছন্নকর্মী রেখেছিলেন কাউন্সিলররা। তারা ঠিকমত জনগণের কাজ করছে কিনা সেটা সরাসরি তাদের কাছ থেকে জানার জন্য আমি হাজিরা নিচ্ছি। আমি জনগণকে জিজ্ঞেস করছি তাদেরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন অভিযানে দেখা গিয়েছিল কি-না। কারণ তাদের কাজটাই হচ্ছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা এবং এজন্য তারা করপোরেশন থেকে টাকা নিচ্ছে।’
ডা. শাহাদাত বলেন, ‘একেকজন প্রায় ১৪ থেকে ১৬ হাজার টাকা করে নিচ্ছে। কিন্তু পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার যে মূল লক্ষ্য সেটা বাস্তবায়ন করছে কিনা তা দেখার জন্য প্রতিটা ওয়ার্ডে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে পূর্ব বাকলিয়া গিয়েছি, পশ্চিম বাকলিয়া গিয়েছি। আজকে (বৃহস্পতিবার) চকবাজার ওয়ার্ডে এসেছি। এভাবে প্রতিটা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে যাবো এবং আমি গণসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য জনগণ যাতে ময়লা আবর্জনা রাস্তায় না ফেলে, নালার মধ্যে না ফেলে যেন ডাস্টবিনে ফেলে এই গণসচেতনতা বৃদ্ধি করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে জায়গায় পরিচ্ছন্নকর্মীরা আপনাদের সেবা দিচ্ছেন না, আপনারা আমাদের জানাবেন, ব্যবস্থা নিব। ইনশাআল্লাহ জনগণের যে কোনো সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছি।’
সিটি মেয়র আরও বলেন, ‘মশা মারতে আমরা মস্কুবান নামের একটি ভেষজ ওষুধ ব্যবহার করছি। এছাড়া উন্নত দেশগুলোতেও খোঁজ নিচ্ছি মশা মারার ভাল ওষুধের জন্য। বর্তমানে যেসব ওষুধ আমাদের সংগ্রহে আছে সেগুলোর মানও পরীক্ষা করা হচ্ছে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিটি করপোরেশনের সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী মারুফসহ পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।