ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

বাবা দিবস আয়োজন

বাবা দিবস আয়োজন

..

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৫ | ০১:২০

জুন মাসের তৃতীয় রোববার বাবা দিবস। মানে একদিন পরে সেই দিনটি। বিশেষ দিনটিকে সামনে রেখে পৃথিবীর সকল বাবার প্রতি রইলো অনেক অনেক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা...

গল্পগুলো বাবার বলা  

নুজহাত জাইমা অধরা

জানো, আমার বাবা প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে আমাকে গল্প শোনান। তাতে কী? সবার বাবাই তো গল্প শোনান। কিন্তু আমার বাবার গল্পগুলো অন্যরকম। শুনতে চাও?
শোনো তবে–
ছোট্ট বাবুর গল্প 
এক যে ছিলো ছোট্ট বাবু। ও প্রতিদিন খেলতে যেতো মাঠে। একদিন ও বলটা এতো জোরে মারলো বল আকাশে ওড়া শুরু করলো। বল উড়ছে দেখে ছোট্ট বাবুও উড়াল দিলো। বলও উড়ছে ছোট্ট বাবুও উড়ছে, উড়ছে, উড়ছে...।
জেলের গল্প 
এক ছিলো গরিব জেলে। জেলেটা এতো গরিব ছিলো কারণ সে কোনো কাজ করতো 
না। খুব আলসে জেলে। একদিন জেলের বউ বললো, তুমি মাছ ধরতে যাও। জেলে বললো, আমাকে ছিপ এনে দাও। জেলের বউ ছিপ এনে দিয়ে বললো, শোন, মাছ না পেলে বসে থাকবে আর যদি মাছ না নিয়ে আসো তবে ঘরে ঢুকতে দেবো না। এখন জেলে মাছ ধরতে গিয়ে বসে আছে, বসে আছে তো বসেই আছে...। 
বই পড়ার গল্প 
আরেক ছোট্ট বাবু। সে খুব গল্প ভালোবাসতো। তাই ওর বাবা ওকে এক জায়গায় নিয়ে গেলো। সেখানে শুধু গল্পের বই। ছোট্ট বাবু তো গল্পের বইয়ের ওপর লাফ দিয়ে বই পড়া শুরু করলো। ছোট্ট বাবু না খেয়ে সকাল, বিকাল, দুপুর, সন্ধ্যা, রাত শুধু পড়ছে, পড়ছে, পড়ছে, পড়ছে...। 

n বয়স : ১‍+২‍+২‍+৩ বছর; তৃতীয় শ্রেণি; আইডিয়াল একাডেমি, সেনবাগ, নোয়াখালী

 

 

আমার মন খারাপের দিন

লিখেছে মাবরুহা তাবাসসুম
এঁকেছে রজত

এই তো সেদিন ২০২৫ শুরু হলো। অথচ দেখতে দেখতে একটা পরীক্ষাও শেষ হয়ে গেলো। দুটি ঈদ যে কীভাবে চলে গেলো, বুঝতেই পারলাম না। এবার পরীক্ষার পর নানুর বাসায় গিয়ে খুব মজা করেছি। খালামণিদের সঙ্গে বসে তাদের পিঠা বানানো দেখলাম। কতো রকমের যে পিঠা বানালেন তারা। আমরা খালাতো ভাইবোনেরা একসঙ্গে বসে পিঠা খেলাম। মাংসের ঝোলে ডুবিয়ে চিতই পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা। আর রসপিঠার তো কথাই নেই। মেজো খালামণির হাতের নরম নরম রসপিঠা মুখে দিলে তালু ও জিহ্বার চাপে তা যেন গলে যায়। ভাপা পিঠা তো আমার সবচেয়ে প্রিয়। রাতে 
খালামণি, আম্মু, আমরা ভাইবোন, নানা-নানি সবাই একসঙ্গে গোল হয়ে বসে গল্প করলাম। সবাই মিলে এক খাটে চাপাচাপি করে ঘুমালাম। তবে এতো মজার মধ্যেও একটি দুঃখের ঘটনা ঘটেছে। কিছু সমস্যার কারণে বাবা ঢাকা থেকে আসতে পারেনি। যা হোক, আমরা ভাইবোনেরা অনেক খেলা করেছি। সবমিলে দিনগুলো খুব মজার কেটেছে। তবে বাবাকে খুব মিস করেছি। কোনো কিছু দিয়ে যদি এই মধুর সময়টিকে স্থির করে দিতে পারতাম! তবে বাবাকে নিয়ে ফের ছুটিটা কাটাতে পারতাম! 
বয়স : ২+৪+৪ বছর; পঞ্চম শ্রেণি, সবুজকুঁড়ি কিন্ডারগার্টেন, ঈশ্বরদী, পাবনা

 

থইথই আনন্দ...

লিখেছে আশহাব আকতার

সবাইকে বাবা দিবসের শুভেচ্ছা। বাবা আমাদের সবচেয়ে আপন মানুষের একজন।
বাবা আমাদের অনেক কিছু শেখান। তিনি বিভিন্ন জিনিস জানাতে বা বোঝাতে চেষ্টা করেন। তাই তিনি সাফল্যের গল্প শোনান।
যখন আমরা গ্রামে যাই বর্ষাকালে। নালাগুলোতে থইথই পানি। সবাই গোসল করে। সাঁতার কাটে কিন্তু আমরা সাঁতার কাটতে পারতাম না। বাবা থাকায় সব চিন্তা দূর হয়ে গেলো। তিনি আমাদের সাঁতার শেখান। কীভাবে ব্রিজ থেকে ঝাঁপ দিতে হয় তাও তিনি শেখান।
এখন আমি সাঁতার কাটতে পারি। এমনকি কীভাবে ব্রিজ থেকে ঝাঁপ দিতে হয় তাও জানি। বাবা সাঁতার না শেখালে সবাই মিলে সাঁতার কাটার মজা জানতাম না।
যখন রাত হয় বাবা আমাদের গল্প শোনান। পড়া না পারলে বুঝিয়ে দেন। তিনি আমাদের খেলাও শিখিয়েছেন। দাবাসহ অনেক খেলা। যখন আমরা পঞ্চগড়ে থাকতাম, তখন আমি প্রথম দাবা খেলি। সেই খেলায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করি। কুড়িগ্রামে এসে দাবায় প্রথম স্থান অর্জন করি। পরে দাবায় বিভাগেও যাই। সব বাবার জন্য।
বাবা আমার ভালো বন্ধু। তোমাদের বাবাও নিশ্চয়ই তোমাদেরও ভালো বন্ধু?
অনেক অনেক ভালোবাসি বাবা। বাবা দিবসের শুভেচ্ছা তোমাকে! 
বয়স : ২+৪+৪ বছর; খলিলগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুড়িগ্রাম

 

আমাদের পৃথিবী
রাঙানো লোকটা

লিখেছে আরওয়াহ ইবনাত

৩০ মে আমি ও আমার ছোট বোন খুব সকালে ঘুম থেকে উঠেছি। স্কুল নেই, তারপরও...। অন্য সব সকালের চেয়ে আজ আমরা একটু বেশিই আনন্দিত। কারণ আজ আমরা বাবার সঙ্গে দাদুবাড়ি যাবো। বছরের এই ভ্রমণটা কতোটা আনন্দ নিয়ে আসে তা বোঝানো যাবে না। তবে এই আনন্দ আমার বড় বোন উপভোগ করতে পারেনি। কারণ, তার রাজ্যের ব্যস্ততা। আমাদের দাদুবাড়ি শেরপুরের নালিতাবাড়ী থেকে ১২ কিলোমিটার উত্তরে পাহাড়ি এলাকায়। দাদু আগেই আমাদের জন্য গাড়ি পাঠিয়েছিলেন। আমরা সেই গাড়িতে করে দাদুবাড়ি যাই। সেখানে গিয়ে দেখি পাহাড় সেজেছে অন্য এক বর্ণিল রংয়ে। আসলে সেখানে তখন আনন্দের ছোঁয়া। সবাই মহাখুশি। দেখতে দেখতে ৭ জুন এলো। এই দিন ঈদ হলেও আমাদের কাছে এই দিনের বিশেষ গুরুত্ব আছে। তো এই বিশেষ দিনে দাদুবাড়িতে আমরা আরো অনেককে নিমন্ত্রণ করি। সবাই আসে। আমরা ছোটদের মাঝে উপহার বিতরণ করি। সবাই শুভেচ্ছা জানাচ্ছে একজনকে। তাকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে। যদিও সে সবসময়ই সুন্দর! এই সুন্দর মানুষটার জন্য সন্ধ্যায় কেক কাটা হয়। হয় বিশেষ খাবারের আয়োজনও। রাতে সবাই যে যার ঘরে ফেরে। আর আমরা ঘরে ফিরে দেখি সুন্দর মানুষটা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছেন। আমরা তাকে ফের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলি–তোমাকে ছাড়া আমাদের পৃথিবী সুন্দর হতো না বাবা!  

বয়স : ৪+৪+৪ বছর; ৬ষ্ঠ শ্রেণি, তারাগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ময়মনসিংহ 

আরও পড়ুন

×