বানরের অভয়ারণ্য

ফ্রা প্রাং স্যাম ইয়ট মন্দির প্রাঙ্গণে বানরের ঘোরাফেরা বেশি
টি এইচ মাহির
প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৪ | ০০:৩২ | আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪ | ১৬:১৬
পৃথিবীতে হাজার হাজার শহর আছে। মানুষ তাঁর বসবাসের প্রয়োজনে শহর গড়ে। যেখানে কোটি কোটি মানুষের বসবাস। তবে থাইল্যান্ডে এমন এক শহর আছে, যেখানে মানুষের চেয়ে বানরের আধিক্যই বেশি। চারদিকে শুধু বানর আর বানর। যেন এক বানর রাজ্য। সবার কাছে শহরটির নাম ‘মাঙ্কি সিটি’ হলেও, কাগজে-কলমে এর নাম ‘লোপবুরি’। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক থেকে উত্তরে ২ ঘণ্টার ট্রেন যাত্রা করলেই পৌঁছা যাবে মাঙ্কি সিটিতে।
বানরের জন্য বিখ্যাত মাঙ্কি সিটিতে বিচরণ করে প্রায় দশ হাজারের বেশি বানর। লম্বা লেজওয়ালা ম্যাকক বানর ঘোরাফেরা করছে চারদিকে। শহরের রাস্তায়, গাছে, প্রাচীন স্থাপনায় দৌড়ঝাঁপ আর খেলাধুলায় দিন কাটে এদের। এরা শহরের ফ্রা প্রাং স্যাম ইয়ট মন্দিরের চারপাশে ঘোরাফেরা করে বেশি; যা লোপবুরির এক প্রাচীন মন্দির। বানররা এখানকার প্রধান আকর্ষণ। কেননা, এ বানরদের স্থানীয়রা পবিত্র মনে করে। এদের ফ্রা প্রাং স্যাম ইয়ট মন্দিরের অভিভাবক বলা হয়। খেমার স্থাপত্যের শৈলীতে দাঁড়িয়ে থাকা ১৩ শতকের এই হিন্দু মন্দিরটি লোপবুরির ঐতিহাসিক সমৃদ্ধির নমুনা হিসেবে বেঁচে আছে। এ স্থাপনার চারপাশে হাজার হাজার বানরের বসবাস। দলবেঁধে বানররা সেখানে ঘুরে বেড়ায়।
প্রাচীনকাল থেকেই লোপবুরি বানরদের আশ্রয়স্থল। এদের নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে বিভিন্ন লোককথা প্রচলিত আছে। শহরের প্রাচীন মন্দির, প্রাসাদ, ঘর-বাড়ি পুরোনো ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাক্ষ্য দেয়। লোপবুরিতে এদের সম্মান জানাতে এবং পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য প্রতি বছরের নভেম্বরে মাঙ্কি বুফে ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করা হয়। এ উৎসবে স্থানীয়রা বানরদের জন্য ফল, শাকসবজি এবং মিষ্টির একটি দুর্দান্ত ভোজ আয়োজন করেন। বানররা ইচ্ছেমতো খায়, খেলাধুলা করে আর স্থানীয়দের সঙ্গে নাচে। বেশ ঘটা করেই এ উৎসব উদযাপন করা হয়। এখানে এরা পর্যটকদের বড় আকর্ষণ। বানরদের উৎসবে দেশি-বিদেশি বহু পর্যটকের দেখা পাওয়া যায়।
লোপবুরি বানরদের শহর হলেও, এখানে মানুষেরও বসবাস রয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে প্রায়ই এদের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। দুষ্টু বানররা প্রায়ই দোকান, ঘর-বাড়িতে হামলা চালায়। তাই এদের হাত থেকে বাঁচতে সতর্ক থাকতে হয় তাদের। তবে বানরদের জন্য ঐতিহাসিক নিদর্শনে সমৃদ্ধ লোপবুরি শহরের পর্যটনশিল্প বেশ চাঙ্গা। তাই বানরদের জীবাণুমুক্ত করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তাদের বাসস্থান ও খাদ্যের জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
- বিষয় :
- পরিবেশ
- জীববৈচিত্র্য