‘মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষায় জাতীয় ঐক্য এখন সময়ের দাবি’
নিউইয়র্কে সিরাজুল আলম খান স্মৃতি পরিষদের সভা

প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন সিরাজুল আলম খান ফাউন্ডেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান ও দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সাঈদ খান।
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫ | ১১:৫৯ | আপডেট: ০২ জুন ২০২৫ | ১২:০০
মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের দলীয়করণ, পারিবারিকীকরণ ও ব্যক্তিকরণের ফলে বিচ্যুতি-বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ আমরা গড়তে পারিনি। তার মানে এই নয় যে, পাকিস্তান ভালো ছিল। ভোটারবিহীন ও রাজনৈতিক দলসমূহের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন ও লুটপাটের মতো একটি অরাজক পরিস্থিতি থেকে জুলাই আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে দেশের মানুষ একটি পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেছিল। নানান ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে, তার মানে এই নয় আগে ভালো ছিলাম। ছাত্র-জনতার স্বপ্ন পূরণে তাই মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষায় জাতীয় ঐক্য এখন সময়ের দাবি।
গত শনিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সিরাজুল আলম খান স্মৃতি পরিষদের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ও আলোচকবৃন্দ এই মতামত ব্যক্ত করেন। ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন ও প্রবাসীদের দাবি দাওয়া আদায়ে সোচ্চার হোন’ স্লোগানে নিউইয়র্কের জামাইকার হিলসাইডের স্টার কাবাব’র হল রুমে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সিরাজুল আলম খান ফাউন্ডেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান ও দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সাঈদ খান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবু সাঈদ খান বলেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলন ছাত্রদের একার আন্দোলন ছিল না। ছাত্ররা নেতৃত্ব দিয়েছে কিন্তু আপামর জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল এই গণঅভ্যুত্থানে। জনগণের ধূমায়িত ক্ষোভ-অসন্তোষ কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের পর জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তনের দাবি, ৩২ নম্বরে হামলা থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধকে লক্ষ্য করে যা কিছু ঘটেছে তা দুঃখজনক। যুদ্ধাপরাধকে আড়াল করতে ছাত্রদের ঘাড়ে পা রেখে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ফায়দা লুটছে।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ গণতন্ত্র মানে মনে করে ভোটতন্ত্র। তারা ভোটের মাধ্যমে নিজের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করতে চায়। আজকে যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে সিরাজুল আলম খান রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠায় সেই রাষ্ট্র সংস্কারের প্রস্তাব করেছিলেন ৪৫ বছর পূর্বে। ঐতিহাসিক ছয় দফা আন্দোলনকে স্বাধীনতা সংগ্রামে উন্নীত করতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন সিরাজুল আলম খান। তার চিন্তা-দর্শন নিয়ে ভিন্নমত থাকতে পারে, সেটি নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভা পরিচালনা করেন সিরাজুল আলম খান স্মৃতি পরিষদের সদস্য সচিব শাহাব উদ্দীন। বক্তব্য রাখেন সিরাজুল আলম খান স্মৃতি পরিষদের অন্যতম নেতা অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান, লিগ্যাল কনসালটেন্ট মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন খান, সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকন, মুজাহিদ আনসারি, জামান তপন, নজরুল ইসলাম, প্রোগ্রেসিভ ফোরামের নেতা জাকির হোসেন বাচ্চু ,আবুল হোসেন, সৈয়দ জুয়েল প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, সিরাজুল আলম খানের জীবন-দর্শন, রাষ্ট্রচিন্তা, স্বাধীনতা সংগ্রামে অনবদ্য ভূমিকা ও নতুন প্রজন্মের কাছে সিরাজুল আলম খানকে পরিচয় করিয়ে দিতে তার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ২২ জুন বিকাল ৬টায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।
- বিষয় :
- সিরাজুল আলম খান
- আবু সাঈদ খান
- নিউইয়র্ক