জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে সেই বাড়িতে এটিইউর তল্লাশি

ভাসাপাড়ার একটি বাড়িতে তল্লাশি শুরু করেছে অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা। ছবি: সমকাল
নেত্রকোণা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২৪ | ১১:৫০ | আপডেট: ০৯ জুন ২০২৪ | ১২:১৪
জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে নেত্রকোণা সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের ভাসাপাড়া গ্রামের একটি বাড়িতে তল্লাশি শুরু করেছে অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের (এটিইউ) সদস্যরা। আজ রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ সদস্যরা ওই বাড়িতে প্রবেশ করেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোণা সদর উপজেলার ভাসাপাড়া গ্রামে নির্জন স্থানে আটপাড়া উপজেলা নোয়াপাড়া গ্রামের আবদুল মান্নান প্রায় ২০ বছর আগে একটি দ্বিতল বাড়ি নির্মাণ করেন। বাড়ির সামনে বড় দুটি পুকুর রয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মান্নান ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) শিক্ষক ছিলেন। তিনি ওই ভবনে একটি কলেজ স্থাপন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। গত দুই বছর আগে বাড়িটি তিনি আরিফ নামে এক ব্যক্তির কাছে ভাড়া দেন। ওই বাড়িতে জঙ্গি প্রশিক্ষণ চলত বলে পুলিশ খবর পায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল দুপুর ১টার দিকে নেত্রকোণা মডেল থানার ওসি আবুল কালামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বাড়িটি ঘেরাও করে। এ ছাড়া জেলা শহরের বনুয়াপাড়ায় তানভির কটেজ নামে আরও একটি বাড়িতে জঙ্গি সদস্য আছে সন্দেহ করছে পুলিশ। শনিবার রাত ১০টা থেকে বাড়িটি ঘেরাও করে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, ওই বাড়িতে জঙ্গি সদস্য আছে।
গতকাল শনিবার দুপুর থেকে সীমানা প্রাচীরঘেরা দ্বিতল বাড়িটির চারপাশ থেকে ঘেরাও করে রাখে পুলিশ। ওই বাড়িতে জঙ্গি প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার করা অস্ত্র ও বোমা থাকতে পারে বলে পুলিশের ধারণা। এরই মধ্যে কিছু সরঞ্জামাদি উদ্ধারের দাবি করেছে পুলিশ। এ সময় বাড়িটির নিচতলার একটি কক্ষে একটি বিদেশি পিস্তল, ১৭ রাউন্ড গুলি, প্রচুর পরিমাণ খেলনা পিস্তল, দুটি ওয়াকি-টকি, একটি হ্যান্ডকাফ, এক বস্তা জিহাদি বইসহ বিভিন্ন জিনিস পাওয়া যায়। পুলিশের ধারণা, বাড়িটিতে বোমাজাতীয় বিস্ফোরক দ্রব্য থাকতে পারে।
আজ রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের সদস্য, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ সদস্যরা বাড়িটিতে প্রবেশ করে তল্লাশি অভিযান শুরু করে।
এলাকাবাসী আরও জানান, ভাড়া দেওয়ার পর থেকে ভাড়াটিয়ারা বাড়ির সীমানা প্রাচীর আরও উঁচু করে। এরপর নারকেলগাছ, আমগাছ ধরে সীমানাপ্রাচীরে প্রায় ২০টির মতো সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়। বাড়িটির ভেতরে দুটি পুকুর রয়েছে। ওই বাড়িতে স্থানীয় কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয় না।
নেত্রকোনার পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমদ আজ সকালে ঘটনাস্থলে যান। সমকালকে তিনি বলেন, অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা রাতেই নেত্রকোনায় পৌঁছেছে। আজ সকাল থেকে বাড়িটি তল্লাশি করছে। নেত্রকোনায় জঙ্গি প্রশিক্ষণ চলত বলে আমাদের কাছে খবর ছিল। সেই মোতাবেক ওই বাড়িটির ওপর নজর রাখা হয়। বাড়িটিতে গতকাল শনিবার দুপুর থেকে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। এরই মধ্যে কিছু আলামত পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, বাড়িটি একটি জঙ্গি আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করা হত। বোমা বিশেষজ্ঞ টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের কাজ শুরু করেছে।
অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের পুলিশ সুপার মো. সানোয়ার হোসেন সমকালকে বলেন, এরই মধ্যে কিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। বাড়িটিতে তল্লাশি অভিযান চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই বাড়িতে জঙ্গি প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। তল্লাশি অভিযান শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।
- বিষয় :
- ময়মনসিংহ
- নেত্রকোণা
- জঙ্গি আস্তানা
- জঙ্গি